টপ পোষ্ট

আফগানদের হারিয়ে স্মরণীয় করল মাসাকাদজার বিদায়

0

জয়ের আবিরে রঙিন হয়েই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। ব্যাট হাতে দারুণ পারফর্ম করে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দলকে দারুণ এক জয় এনে দিয়েছেন তিনি। তার ৭১ রানের ঝড়ো ইনিংসে ভর করেই ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে জিম্বাবুয়ে পেল প্রথম জয়। আর মাসাকাদজার সঙ্গেই টুর্ণামেন্ট থেকেও বিদায় নিল আফ্রিকার দলটি।

শুক্রবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে আফগানদের করা ১৫৫ রান ৩ বল আগেই মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে টপকে যায় মাসাকাদজারা।

এদিন আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে শেষবার ব্যাটিংয়ে নেমে আফগান বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালিয়েছেন মাসাকাদজা। একের পর এক বল সীমানা ছাড়া করে তৈরি করেছেন জিম্বাবুয়ের জয়ের পথ। ৪২ বলে তিনি খেলে যান ৭১ রানের অসাধারণ ইনিংস। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ১১তম হাফসেঞ্চুরি পূরণ করা ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৪ বাউন্ডারি ও ৫ ছক্কায়।

শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন মাসাকাদজা। ব্রেন্ডন টেলর ১৭ বলে ১৯ রান করে আউট হলেও তার আগ্রাসী ব্যাটিং থামেনি। জিম্বাবুয়ে অধিনায়ককে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন ওয়ান ডাউনে নামা রেগিস চাকাভা। ৩২ বলে এক চার ও দুই ছক্কায় ৩৯ রানের ইনিংস খেলেন এই ব্যাটসম্যান।

তাদের গড়ে দেওয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে জিম্বাবুয়ের জয় নিশ্চিত করেন শন উইলিয়ামস (২১*) ও টিনোটেন্ডা মুতম্বোদজি (১*)। তাতে চলতি ত্রিদেশীয় সিরিজে প্রথমবার হারের মুখ দেখে আফগানিস্তান।

এদিন আফগান বোলারদের মধ্যে সুবিধা করতে পারেননি তেমন কেউই, উল্টো মার খেয়েছেন সবাই। এর মধ্যেও সবচেয়ে সফল বোলার মুজিব উর রহমান। এই স্পিনার ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে পেয়েছেন ২ উইকেট। জিম্বাবুয়ের হারানো অন্য উইকেটটি দৌলত জাদরানের।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা আফগানিস্তানের স্কোর ৯ ওভারেই ৮০ ছাড়ায়। উইকেট পড়েনি একটিও। তাতে বিশাল সংগ্রহের ইঙ্গিতই দিয়েছিল তারা। কিন্তু দুর্দান্ত শুরুর শেষটা ভালো হয়নি। জিম্বাবুয়ের ঘুরে দাঁড়ানো পারফরম্যান্সে নির্ধারিত ২০ ওভারে আফগানরা ৮ উইকেটে করে ১৫৫ রান।

আফগানিস্তানের ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গেছে আগেই। একই সঙ্গে সিরিজ থেকে ছিটকে যাওয়া নিশ্চিত হয়েছে জিম্বাবুয়ের। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ম্যাচটি ছিল তাই ‘নিয়মরক্ষা’র। শুক্রবার এই ম্যাচে ব্যাট হাতে আফগানিস্তান দারুণ শুরু পেলেও সেটা ধরে রাখতে পারেনি।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই আফগান ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও হযরতউল্লাহ জাজাই জিম্বাবুইয়েন বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালিয়েছেন। চার-ছক্কার ফুলঝুড়িতে ৯.৩ ওভারে তারা যোগ করেন ৮৩ রান। জাজাইয়ের বিদায়ে আফগানরা হারায় প্রথম উইকেট। ২৪ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় এই ওপেনার খেলে যান ৩১ রানের ইনিংস।

আরেক ওপেনার রহমানউল্লাহর তাণ্ডব অবশ্য থামেনি। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি পূরণ করে খেলেন ৬১ রানের ঝড়ো ইনিংস। মাত্র তৃতীয় টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা এই ব্যাটসম্যান ইনিংসটি সাজান ৪ বাউন্ডারি ও ৪ ছক্কায়।

এই ওপেনারের বিদায়ের পর আফগানিস্তানের আর কোনও ব্যাটসম্যান সুবিধা করতে পারেননি। শফিকউল্লাহ (১৬), নাজিবউল্লাহ জাদরান (৫), মোহাম্মদ নবী (৪), গুলবাদিন নাইব (১০) ও আসগর আফগান (০) সবাই ব্যর্থতার মিছিলে যোগ দিলে ১৫৫ রানে শেষ হয় আফগানিস্তানের ইনিংস। রশিদ খান অপরাজিত থাকেন ৯ রানে।

জিম্বাবুয়ের সবচেয়ে সফল বোলার ক্রিস্টোফার এমপোফু। ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা এই পেসার ৪ ওভারে ৩০ রান খরচায় পেয়েছেন ৪ উইকেট। ১৮ রান দিয়ে ২ উইকেট পেয়েছেন টিনোটেন্ডা মুতম্বজি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আফগানিস্তান:  ২০ ওভারে ১৫৫/৮ (গুরবাজ ৬১, জাজাই ৩১, শফিকউল্লাহ ১৬, নাজিবউল্লাহ ৫, নবি ৪, নাইব ১০, ফজল ১২, রশিদ ৯*, আসগর ০, দওলত ০; এনডিলোভু ৪-০-২৩-০, জার্ভিস ৩-০-২৭-১, উইলিয়ামস ৪-০-৩৪-১, এমপোফু ৪-০-৩০-৪, বার্ল ১-০-১৩-০, মাদজিভা ১-০-৬-০, মুতুমবোদজি ৩-০-১৮-২)।

জিম্বাবুয়ে: ১৯.৩ ওভারে ১৫৬/৩ (টেইলর ১৯, মাসাকাদজা ৭১, চাকাভা ৩৯, উইলিয়ামস ২১*, মুতুমবোদাজি ১*; মুজিব ৪-০-২৮-২, দওলত ৩.৩-০-২৭-১, নাইব ৩-০-১৯-০, নবি ৪-০-৪০-০, রশিদ ৪-০-২৯-০, ফজল ১-০-১৩-০)।

ফল: জিম্বাবুয়ে ৭ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: ক্রিস এমপোফু

শেয়ার করুণ

আপনার মন্তব্য দিন