টপ পোষ্ট

নাগরিকত্ব দিলে তবেই দেশে ফিরবে রোহিঙ্গারা

0

ভিটেবাড়ি পুনরুদ্ধার, নাগরিকত্ব, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা জোরদার এবং নিরাপদ প্রত্যাবাসনের নিশ্চয়তা দেয়া হলেই রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফেরত
যাবে। অন্যথায় তারা
যাবে না। রোববার রোহিঙ্গাদের দুই বছর পূর্তিতে সমাবেশে এসব কথা জানান নেতারা।

রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, বাংলাদেশে আশ্রিত ১১ লাখের
বেশি রোহিঙ্গা একসঙ্গেই ঘরে ফিরে যাবে। এ জন্য
মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে
সংলাপে বসতেও রাজি
আছেন বলে তারা
জানান।

রোববার সকালে কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে ৫ দফা দাবিতে রোহিঙ্গাদের এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে
নিরাপদে নিজভূমিতে ফিরতে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

সমাবেশে উপস্থিত রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে নেতারা বলেন, ‘আমাদের সব সময় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের যদি মিয়ানমারে ফিরে যেতে হয়, একসঙ্গে যাব, একসঙ্গে সীমান্ত পার হব। রোহিঙ্গা মুসলমানদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে নিতে হবে মিয়ানমারকে। সঙ্গে রাখাইনে ফেলে আসা ভিটেমাটিও ফিরিয়ে দিতে
হবে। তাহলেই প্রত্যাবাসন সফল হবে।’

রোহিঙ্গা নেতা মুহিব উল্লাহ বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের পূর্ণ
সমর্থন নিয়ে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরতে চাই। নাগরিকত্ব, স্বাধীনতা ও মর্যাদার সঙ্গে বসবাসের নিশ্চয়তা পেলে শিবিরের সব রোহিঙ্গা ফিরে যাবে। এ জন্য
আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে সংলাপে বসতেও রাজি।’

রোহিঙ্গা সোসাইটির সভাপতি মাস্টার মুহিব উল্লাহর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য শেষে
বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন রোহিঙ্গা মাওলানা নুরুল
ইসলাম।

মোনাজাতে মিয়ানমারে নিহত ও আহতদের জন্য দোয়া
কামনা করা হয়। পাশাপাশি রোহিঙ্গারা যেন দ্রুত
সময়ে মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারে সে জন্য বিশেষ প্রার্থনা করে মোনাজাত করেন। এ ছাড়াও বর্তমান সরকার
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে
যে মানবতা দেখিয়েছে তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।

দেড় ঘণ্টার সমাবেশে বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে লক্ষাধিক রোহিঙ্গা উপস্থিত হন। সকাল
৯টার আগেই বিভিন্ন শিবির থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রোহিঙ্গারা দলে দলে মধুরছড়ার সমাবেশস্থলে জড়ো হন।

শুধু সমাবেশ নয়, একই সময়ে রোহিঙ্গা রিপোজি কমিশনের ব্যানারে কুতুপালং ডি-৫ ব্লকে করা হয়েছে মানববন্ধন ও দোয়া মাহফিল। ওখানেও প্রত্যাবাসনে যেতে
রোহিঙ্গা পাঁচ দাবি
উল্লেখ করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে- নাগরিকত্ব, মিয়ানমারে নিজেদের বসতভিটে ফেরত, ধর্ষণ ও গণহত্যার বিচার দাবি।

এ দিকে সমাবেশে রোহিঙ্গা নেতারা মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো অমানবিক নির্যাতনের প্রতিবাদ জানান। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ‘নাটক’ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর হিউম্যান রাইটসের সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ উল্লাহ বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করেছি। সমাবেশে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনসহ পাঁচ
দফা দাবি জানানো হয়েছে। এই পাঁচ
দফা দাবি পূরণ
না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যাবাসন চাই না।

রোহিঙ্গাদের মহাসমাবেশ ঘিরে নেয়া
হয়েছিল কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। মধুরছড়া আশ্রয়
শিবিরের ইনচার্জ মাইন
উদ্দিন বলেন, সমাবেশ ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসার
তৎপর ছিল।

শেয়ার করুণ

আপনার মন্তব্য দিন