টপ পোষ্ট

২০ মিনিটে বেঙ্গালুরু থেকে কলকাতায় হৃদযন্ত্র

0

সিনেমাকেও হার মানাল এই ঘটনা। মাত্র ২০ মিনিটে বিমানবন্দর থেকে হাসপাতালে গেল হৃদযন্ত্র। সোমবার ভোরে বেঙ্গালুরু থেকে বিমানে বরুণের হৃদযন্ত্র নিয়ে কলকাতায় রওয়ানা হয় একটি দল।

দাতা বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা। গ্রহীতা কলকাতার। মাঝে দেড় হাজার কিলোমিটারের দূরত্ব। সেই ব্যবধান ঘুচিয়ে দিয়ে কলকাতায় শুরু হলো পূর্ব ভারতের প্রথম হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার। যা সফল হলে নতুন জীবন পাবেন দিলচাঁদ সিংহ। আর তার হৃদয় জুড়ে বেঁচে থাকবেন বেঙ্গালুরুর বরুণ ডি কে। খবর এবেলার।

চার ঘণ্টার মধ্যে বরুণের হৃদযন্ত্র দিলচাঁদ-এর শরীরে বসানোটা জরুরি ছিল। কারণ, চার ঘণ্টা সময় পেরিয়ে গেলে এই হৃদযন্ত্র কাজ করা বন্ধ করে দেবে। এই বিষয়গুলি কলকাতা পুলিশকেও জানানো হয়। এরপরই পরিকল্পনা মতো কলকাতা বিমানবন্দর থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত তৈরি করা হয় গ্রিন করিডর। এই কর্মসূচিতে সামিল করা হয় বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটকেও।

এই হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনকে ঘিরেই সোমবার সকাল থেকে ই-এম বাইপাস লাগোয়া ফর্টিস হাসপাতালে সাজ সাজ রব। ইতোমধ্যেই বেঙ্গালুরু থেকে বরুণ ডি কে-র হৃদযন্ত্র নিয়ে এসে দিলচাঁদ সিংহের শরীরে প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার শুরু হয়েছে। অস্ত্রোপচারকে সফল করতেই সকাল থেকে পুলিশ, প্রশাসনে সক্রিয়তা ছিল তুঙ্গে।

সোমবার সকাল ১০.৪০টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছায় বেঙ্গালুরু থেকে আসা বিমানটি। একটি বিশেষ ক্যাসকেডে করে হৃদযন্ত্রটি নিয়ে আসা হয়েছিল। কলকাতার ইএম বাইপাস হাসপাতালে ভর্তি দিলচাঁদ সিংহ-কেও অস্ত্রোপচারের জন্যও তৈরি রাখা হয়েছিল। বেলা ১০.৫৫ মিনিটে বিমানবন্দর থেকে বিশেষ অ্যাম্বুল্যান্সে হৃদযন্ত্র রওনা হতেই ইএম বাইপাসের পাশে থাকা হাসপাতালে তৎপরতা শুরু হয়ে যায়।

দিলচাঁদ সিংহ-কে অস্ত্রোপচারের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সিনেমাকেও হার মানাল এই ঘটনা, মাত্র ২০ মিনিটে বিমানবন্দর থেকে হাসপাতালে গেল হৃদযন্ত্র কলকাতা শহরে এভাবে আন্তঃরাজ্য গ্রিন করিডরে হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের ঘটনা প্রথম। স্বাভাবিকভাবেই তাই পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গ্রিন করিডর নিয়ে যথেষ্টই সতর্ক ছিল। একটা মুহূর্তের জন্য সময় নষ্ট না হয় তার জন্যও সেরে রাখা হয়েছিল যাবতীয় প্রস্তুতি।

হৃদযন্ত্র কলকাতায় পৌঁছলেই যে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দৌঁড়তে হবে তা জানত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আগেভাগেই অস্ত্রোপচারে সরাসরি অংশ নেওয়া ছয় চিকিৎসককে তৈরি রেখেছিল। এছাড়া এই অস্ত্রোপচারের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল আরও একদল চিকিৎসককে। এঁরা সবাই হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনে দক্ষ। সিনেমাকেও হার মানাল এই ঘটনা, মাত্র ২০ মিনিটে বিমানবন্দর থেকে হাসপাতালে গেল হৃদযন্ত্র ।

গত বছর বেশ কিছু অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ঘটনা ঘটেছে কলকাতায়। সে সময়ও শহরের ২টি হাসপাতালের মধ্যে গ্রিন করিডর তৈরি করা হয়েছিল। অঙ্গ প্রতিস্থাপন কিছু ক্ষেত্রে সফল হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু অঙ্গ প্রতিস্থাপনে সবচেয়ে বড় যেমন সময় তেমনি যার শরীরে তা প্রতিস্থাপন হবে তার শারীরিক অবস্থা কেমন সেটাও খেয়ালে রাখতে হয়। বেঙ্গালুরুর বরুণ ডিকার হৃদযন্ত্র আদৌ দিলচাঁদ-এর শরীর নিতে পারছে কি না তা কয়েক দিন পরে জানা যাবে।

শেয়ার করুণ

আপনার মন্তব্য দিন