টপ পোষ্ট

IELTS কী, কেন, কীভাবে?

0

আইইএলটিএস (IELTS) নামের সাথে কম বেশি আমরা সবাই পরিচিত। কিন্তু এটি আসলে কী? কেনো করা হয় এবং কীভাবে করা হয় এর আদ্যপান্ত জানবো এই প্রতিবেদনে।

যাদের মাতৃভাষা ইংরেজি না, তাদের ইংরেজি ভাষার দক্ষতা যাচাইয়ের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতিই হল ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্টিং সিস্টেম (আইইএলটিএস)। বিদেশে স্থায়ভাবে বসবাস কিংবা পড়তে যাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম শর্ত আইইএলটিএস।

এক সময় যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য আইইএলটিএস প্রয়োজন ছিল। তবে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও এ পরীক্ষার স্কোর গ্রহণ করছে এবং ইউরোপের বেশির ভাগ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আইইএলটিএস গ্রহণ করে থাকে।

বাংলাদেশে আইইএলটিএস পরীক্ষা ব্রিটিশ কাউন্সিলের আওতায় হয়ে থাকে। তবে এজন্য অন কম্পিউটার পরীক্ষা ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা এবং সিলেট থেকে দিতে পারবেন। আর অন পেপার পরীক্ষা দিতে পারবেন ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, খুলনা এবং রাজশাহী থেকে।

ব্রিটিশ কাউন্সিলে আইইএলটিএস পরীক্ষা দেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে যা করবেন-

এজন্য প্রয়োজন ২ কপি সম্প্রতি তোলা পাসপোর্ট সাইজ রঙ্গিন ছবি। ৬ মাসের বেশি পুরনো ছবি ব্যবহার করবেন না। আপনার চেহারা স্পষ্ট বোঝা যায় এমন ছবি ব্যবহার করবেন। ছবি তোমার সময় চশমা খুলে ছবি তুলবেন। ছবির অপর পাশে কলম দিয়ে নিজের নাম লিখে দেবেন।
পাসপোর্ট না থাকলে দ্রুতই পাসপোর্ট বানিয়ে নিন। কারণ আইইএলটিএস এর রেজিস্ট্রেশনের জন্য পাসপোর্ট লাগবেই। রেজিস্ট্রেশন সেন্টারে যাওয়ার সময় পাসপোর্টের ফটোকপি নিয়ে যেতে পারেন।

যদি আপনি আপনার আইইএলটিএস স্কোরটি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় অথবা কলেজে পাঠাতে চান তাহলে অ্যাপ্লিকেশন ফর্মে সেই বিশ্ববিদ্যালয়/কলেজের নাম নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করতে হবে।

নির্দিষ্ট সেন্টারে গিয়ে নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন ফর্ম জমা দিতে হবে।

আইইএলটিএস পরীক্ষার ধরন

আইইএলটিএস পরীক্ষা ২ ধরনের পদ্ধতিতে নেওয়া হয়। একাডেমিক ও জেনারেল ট্রেনিং (জিটি)।

একাডেমিক মডিউল

বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তর অথবা পিএইচডি পর্যায়ে পড়াশোনার জন্য একাডেমিক মডিউলে পরীক্ষা দিতে হয়।

জেনারেল ট্রেনিং

কোনো শিক্ষার্থী যদি কারিগরি বিষয় বা প্রশিক্ষণে ভর্তি হতে চান, তবে তাকে জেনারেল ট্রেনিং মডিউলে পরীক্ষা দিতে হয়। এ ছাড়া যারা ইমিগ্রেশনের জন্য যেতে চান, তাদেরকেও জেনারেল ট্রেনিং মডিউলে পরীক্ষা দিতে হয়।

দুই ধরনের মডিউলেই ৪টি অংশ থাকে। লিসেনিং (Listening), রিডিং (Reading), রাইটিং (Writing) ও স্পিকিং (Speaking)।

লিসেনিং

রেকর্ডিং কথোপকথন শুনে এ অংশে প্রশ্নের উত্তর করতে হয় পরীক্ষার্থীদের। কথোপকথন শুনে বোঝার ক্ষমতা যাচাই করা হয়। যেখানে ৪০টি প্রশ্ন থাকে। ৩০ মিনিটে ৪টি অংশে এ পরীক্ষা নেওয়া হয়। একটি বিষয় কেবল একবারই বাজিয়ে শোনানো হয়।

এ অংশে পরীক্ষার্থীদের অ্যাকসেন্ট বুঝতে হয়। তারা ৪ রকম অ্যাকসেন্টের মুখোমুখি হতে পারেন। যেমন- ব্রিটিশ, আমেরিকান, কানাডিয়ান ও অস্ট্রেলিয়ান।

এক্ষেত্রে বিভিন্ন অনলাইন ভিডিও ও ইউটিউব ভিডিও, চলচ্চিত্র, খেলার ধারাভাষ্য ইত্যাদি দেখে আপনি চর্চা করতে পারেন।

রাইটিং

এ অংশে ইংরেজি লেখার দক্ষতা যাচাই করা হয়। যেখানে ১ ঘণ্টায় দুটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হয়। দ্বিতীয় প্রশ্নটিতে প্রথম প্রশ্নের চেয়ে বেশি নম্বর থাকে।

রাইটিং-এ ২ ধরণের টাস্ক থাকে। টাস্ক-১-এর ক্ষেত্রে বিভিন্ন লেখচিত্র বা গ্রাফ-এর বর্ণনা দিতে হতে পারে।

টাস্ক-২-এর ক্ষেত্রে মূলত বিশ্লেষণী দক্ষতা, সমালোচনামূলক মূল্যায়ন এর দরকার হয়। এক্ষেত্রে বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদন বা সমালোচনামূলক প্রবন্ধ-নিবন্ধ বিস্তারিতভাবে পড়া থাকলে বেশ সহায়ক হয়।

এক্ষেত্রে একটি ফরম্যাট অনুসরণ করা যায়। প্রথম ও দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে সূচনা। এরপর মূল কথা বা আইডিয়া, তারপর কারণ বা যৌক্তিক বিশ্লেষণ। সবশেষে উদাহরণ। এ নিয়মটি অনুসরণ করলে সাধারণত স্কোর ভালো আসে।

এজন্য ইংরেজি গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন পড়ার চর্চা করলে সেটি কাজে লাগবে।

স্পিকিং

স্পিকিং অংশে পরীক্ষার্থীদের মোটামুটি ১১ থেকে ১৪ মিনিটের পরীক্ষা দিতে হয়। প্রথম অংশে পরীক্ষার্থীকে কিছু সাধারণ প্রশ্ন করা হয়, যেমন: পরিবার, পড়াশোনা, শখ ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়।

দ্বিতীয় অংশে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে ২ মিনিট কথা বলতে হয়। এর আগে প্রস্তুতির জন্য এক মিনিট সময় দেওয়া হয়।

তৃতীয় অংশে থাকে কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে পরীক্ষকের সঙ্গে ৪-৫ মিনিটের কথোপকথন।

এ অংশে বেশ কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়। যেমন- কথার গতি ও সাবলীলতা, শব্দভাণ্ডারের বিস্তৃতি, ব্যাকরণের বৈচিত্র্যময় ও নির্ভুল ব্যবহার এবং নির্ভুল ও বোধগম্য উচ্চারণ।

রিডিং

এ অংশে পরীক্ষার্থীদের ১ ঘণ্টায় ৩টি অনুচ্ছেদ থেকে মোট ৪০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। বিভিন্ন জার্নাল, বই, সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন থেকে কিছু অংশ তুলে দেওয়া হয়ে থাকে। সেখান থেকেই বাক্য পূরণ, সংক্ষিপ্ত উত্তর, সঠিক উত্তর খুঁজে বের করা ইত্যাদি প্রশ্ন থাকে।

শেয়ার করুণ

Comments are closed.