টপ পোষ্ট

ইনিংস পরাজয় এড়ানো লক্ষ্যে তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ

0

ইডেনের ঐতিহাসিক গোলাপি বলের টেস্টে ২৪১ রানের লিড নিয়েই ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। সেই লক্ষ্যে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিক পেসারদের তোপের মুখে ফের বিপর্যস্ত হয় বাংলাদেশ। মাত্র ১৩ রানেই চার উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা দলকে টেনে তোলার কাজ করে যাচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। তার ফিফটিতে দেড়শ ছাড়ানো বাংলাদেশের সংগ্রহ দ্বিতীয় দিন শেষে ৬ উইকেটে ১৫২ রান।

এদিন নিজের ২১তম টেস্ট ফিফটি তুলে নিয়ে মুশফিকুর রহিম ৫৯ রানে ক্রিজে থাকলেও ষষ্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন তাইজুল ইসলাম (১১)। মূলত তার আউটের মধ্য দিয়েই শেষ হয় দ্বিতীয় দিনের খেলা।

৭০ বলে দশ চার হাঁকানো মুশফিক এই ইনিংস খেলার পথে দু’দুবার শিকার হন আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের। তবে নিজের কনফিডেন্স আর বুদ্ধিমত্তায় দুবারই রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান মি. ডিপেন্ডেবল। তাই এখন শেষ ভরসা হিসেবে তার দিকেই তাকিয়ে টাইগারভক্তরা।

মাত্র ১৩ রানে চার উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ দল যখন খাঁদের কিণারে, ইডেনে তখন দ্বিতীয় দিনেই ম্যাচের শেষ দেখছিলেন অনেকে। সেখান থেকে দুই ভায়রা মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহর দৃঢ়তায় সে আশঙ্কা থেকে উদ্ধার পায় দল। পরে মুশফিকের ব্যাটে চড়েই তৃতীয় দিনে গড়াতে যাচ্ছে ইডেন টেস্টের খেলা।

এদিন হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়েন রিয়াদ। ১৯তম ওভারে দ্রুত একটি সিঙ্গেল নিতে গিয়ে হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে মাঠ ছাড়তে হয় রিয়াদকে। তার আগে মুশফিকের সঙ্গে গড়েন অতি মূল্যবান ৬৯ রানের জুটি। যা দলকে টেনে তুলতে সাহায্য করে খাঁদের কিনার থেকে। মাঠ ছাড়ার আগে সাত চারে ৩৯ রান করেন মাহমুদুল্লাহ।

এসময় ব্যাট করতে নামেন মিরাজ। মুশফিকের সঙ্গে আরও ৪৯ রান যোগ করে মিরাজ আউট হন ১৫ রান করে। ফলে ১৩৩ রানেই পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

অন্যদিকে, আউট হওয়া চার ব্যাটসম্যান হলেন- সাদমান (০), মুমিনুল (০), মোহাম্মদ মিঠুন (৬) ও ইমরুল কায়েস (৫)। এর মধ্যে তিনজনকেই সাজঘরে ফেরান ইশান্ত।

এদিন দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শুরুতেই ত্রাস হয়ে দেখা দেন প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেয়া ইশান্ত শর্মা। দীর্ঘদেহী এই পেসারদের তোপে প্রথমে শূন্য রানে সাদমানকে এবং পরে দুই রানে মুমিনুলকে হারায় দল।

লেগ বিফোর হয়ে ফেরা সাদমান এদিন রিভিউ নিয়ে বাঁচতে পারেননি। তাই শূন্য হাতেই ফিরতে হয় আগের ইনিংসে সর্বোচ্চ ২৯ রান করা এই ওপেনার।

আর প্রথম ইনিংসের মতো এবারো শূন্য রানেই উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অধিনায়ক। অধিনায়কত্বের চাপে যেন পিষ্ট হচ্ছেন লিটল মাস্টার খ্যাত টেস্ট স্পেশালিষ্ট মুমিনুল। দুই টেস্টের এক ইনিংসেও নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি এই ব্যাটসম্যান। যাতে বারবার বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।

এর আগে শনিবার ব্যাট করতে নেমে প্রথম সেশনে মাত্র একটি উইকেট হারালেও দ্বিতীয় সেশনেই টাইগার পেসারদের তোপের মুখে পড়ে স্বাগতিকরা। প্রায় দুই সেশন খেলে ৯ উইকেট হারিয়ে বোর্ডে ৩৪৭ রান তুলেই ইনিংস ঘোষণা করে ভারত।

এদিন আল-আমিন, এবাদত ও আবু জায়েদের পেস তোপের মুখে ৬ উইকেট হারিয়ে আরও ১৭৩ রান যোগ করতে সমর্থ হয় বিরাট কোহলিরা। যাতে ২৪১ রানের এগিয়ে যায় দলটি।

এদিন শতকের দেখা পেয়েছেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। এবাদত হোসেনের বলে তাইজুলের দুর্দান্ত ক্যাচ হওয়ার আগে খেলেন ১৩৬ রানের অনবদ্য এক ইনিংস। তার ১৯৪ বলের এই ইনিংসে ছিল ১৮টি চারের মার। আর কোহলির আগে আবু জায়েদের বলে বোল্ড হওয়া জাদেজা ফেরেন ১২ রান করে। পরে অশ্বিনকে তুলে নেন ভারত ইনিংসের প্রথম উইকেট শিকারি আল আমিন। ফেরার আগে ৯ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

এর আগে শনিবার দুপুরে বড় লিডের লক্ষ্যে দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করতে নামা ভারতীয় শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। এরপর উইকেট শিকারে যোগ দেন আবু জায়েদ, এবাদত ও আল আমিন। যাতে ৩৩১ রানেই নবম উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। সেঞ্চুরিম্যান কোহলিকে তুলে নিয়ে এদিন উল্লাসে মাতেন পেসার এবাদত হোসেন।

রবিচন্দন অশ্বিন ৯ রানে, উমেশ যাদব আর ইশান্ত শর্মা শূন্য রানে আউট হন। তিনটি করে উইকেট নেন আল আমিন ও এবাদত হোসেন। আর আবু জায়েদ নেন দুটি উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: 

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩০.ওভারে ১০৬

ভারত ১ম ইনিংস: ৮৯.৪ ওভারে ৩৪৭/৯ (ডি.) (আগের দিন ১৭৪/৩) (মায়াঙ্ক ১৪, রোহিত ২১, পুজারা ৫৫, কোহলি ১৩৬, রাহানে ৫১, জদেজা ১২, ঋদ্ধিমান ১৭*, অশ্বিন ৯, উমেশ ০, ইশান্ত ০, শামি ১০*; আল আমিন ২২.৪-৩-৮৫-৩, আবু জায়েদ ২১-৬-৭৭-২, ইবাদত ২১-৩-৯১-৩, তাইজুল ২৫-২-৮০-১)।

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৩২.৩ ওভারে ১৫২/৬ (সাদমান ০, ইমরুল ৫, মুমিনুল ০, মিঠুন ৬, মুশফিক ৫৯*, মাহমুদউল্লাহ ৩৯ (আহত অবসর), মিরাজ ১৫, তাইজুল ১১; ইশান্ত ৯-১-৩৯-৪, উমেশ ১০.৩-০-৪০-২, শামি ৮-০-৪২-০, অশ্বিন ৫-০-১৯-০)।

শেয়ার করুণ

আপনার মন্তব্য দিন