টপ পোষ্ট

বাপ-দাদার আমলের জীবনযাত্রা বদলে ফেলছে সৌদি

0

পুরুষানুক্রমে চলে আসা রক্ষণশীল সৌদি আরবকে পুরো মাত্রায় বদলে দিচ্ছেন দেশটির পশ্চিমাপন্থী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। শিক্ষা, সংস্কৃতি, যুদ্ধ- সবখানেই সংস্কারের ছোঁয়া। শুধু তাই নয়, সৌদিদের জীবনযাপনের মানও বদলে দিতে চান যুবরাজ।

এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে এবারের বাজেটে নতুন এক প্রকল্পের আওতায় ৩৪.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ দিয়েছে সৌদি রাজপরিবার। নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়নে ‘কোয়ালিটি অব লাইফ প্রোগ্রাম ২০২০’ প্রকল্প ঘোষণা করেছে সৌদি আরবের অর্থনীতি ও উন্নয়ন কাউন্সিল। ৩৪.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কোয়ালিটি অব লাইফ প্রকল্পটি দেশটির অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যকরণ ও তেলনির্ভরতা কমাতে ভিশন ২০৩০-এর একটি গুরত্বপূর্ণ অংশ।

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়ার শুক্রবারের এক খবরে এ তথ্য দেয়া হয়েছে। আল আরাবিয়ার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ইতিমধ্যেই দেশটির মন্ত্রিপরিষদ প্রকল্পটির অনুমোদন দিয়েছে। এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য দেশটির অর্থনীতি, সংস্কৃতি, বিনোদন ও ক্রীড়া খাতে নতুন বিনিয়োগে সুযোগ সৃষ্টি করা।

যার ফলে নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়ন হবে এবং বিনিয়োগকারীদেরও সফলতা ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম বৃদ্ধি পাবে।

এ প্রকল্পটিরও নেপথ্যে রয়েছেন সৌদি আরবের অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান।

ভিশন ২০৩০ কে বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই এ প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছে। তিনি সৌদি বাদশাহ সালমানের নেতৃত্বে সৌদি অর্থনীতি, সামাজিক অবস্থান ও উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। কোয়ালিটি অব লাইফ প্রোগ্রামের আওতায় বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকল্পটির ১৩০ বিলিয়ন রিয়ালের মধ্যে ৭০ বিলিয়ন রিয়াল বাণিজ্যিক বিনিয়োগ করা হবে।

এর উদ্দেশ্য ২০২০ সালের মধ্যে তেল ব্যতীত জাতীয় উৎপাদনে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি করা।

মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি সামরিক বাজেট বরাদ্দের দিক দিয়ে সৌদি আরব বর্তমানে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দেশে পরিণত হয়েছে।

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউট বা এসআইপিআরআই গত বুধবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে এ তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, সৌদি আরব ২০১৭ সালে সামরিক খাতে ৬৯.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করেছে, যা তার আগের বছরের তুলনায় ৯.২ শতাংশ বেশি।

এদিকে ইরানি সংবাদমাধ্যম পার্সটুডে দাবি করেছে, মধ্যপ্রাচ্যে একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্যেই সৌদি আরবের সামরিক বাজেট বৃদ্ধি করা হয়েছে।

এর আগে সামরিক বাজেট বরাদ্দের দিক দিয়ে আমেরিকা ও চীনের পর রাশিয়া ছিল তৃতীয় এবং সৌদি আরব ছিল চতুর্থ। কিন্তু গত বছর রাশিয়া সামরিক বাজেটের পরিমাণ এক-পঞ্চমাংশ হ্রাস করায় সৌদি আরব তৃতীয় অবস্থানে চলে এসেছে।

সৌদি আরব একাই পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে সামরিকীকরণ করার চেষ্টা করছে। সামরিক খাতে সৌদি আরবের এ পদক্ষেপ কয়েকটি দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ।

প্রথমত, সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য ইরানকে অভিযুক্ত করছে। অথচ ইরানের সামরিক উদ্দেশ্য কেবল প্রতিরক্ষামূলক এবং অন্য কোনো দেশে যুদ্ধ কিংবা হস্তক্ষেপের কোনো ইচ্ছা তেহরানের নেই।

এ কারণে সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির দেশগুলোর তালিকায় ইরানের নাম নেই।

এসআইপিআরআইয়ের একজন গবেষক সিমন বেসম্যান বলেছেন, রিয়াদের সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান যুদ্ধবিগ্রহ।

সংবাদমাধ্যমটি আরও দাবি করে, সৌদি আরব গত ২০১৫ সাল থেকে ইয়েমেনের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চালিয়ে আসছে এবং প্রতিদিন তারা কোনো না কোনো এলাকায় বোমাবর্ষণ করে হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে।

শেয়ার করুণ

আপনার মন্তব্য দিন