টপ পোষ্ট

এবারের বিশ্বকাপে প্রথম অঘটনের শিকার ইংল্যান্ড

0

বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দল ইংল্যান্ড হেরে গেছে। আফগানিস্তানের ছুড়ে দেয়া ২৮৫ রান করতে পারেনি তারা। আফগানদের বোলিং তোপে ২১৫ রানে থেমে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস। ৬৯ রানের বড় জয় পেয়েছে শাহিদির দল। এর মধ্য দিয়ে এবারের বিশ্বকাপে জয়ের মুখ দেখলো আফগানরা।

নয়া দিল্লিতে টস জিতে প্রথমে আফগানিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ইংল্যান্ড। ৪৯.৫ বলে ২৮৪ রান তোলে আফগানরা।

২৮৫ রানের লক্ষ্যে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় ইংল্যান্ড। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ফজল হক ফারুকির বলে লাইন মিস করে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন জনি বেয়ারস্টো। এই ওপেনার অবশ্য রিভিউ নিয়েছিলেন তবে বাঁচতে পারেননি।

দুর্দান্ত ফর্মে থাকা জো রুট উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। তিনে নেমে ফিরেছেন দ্রুতই। সপ্তম ওভারে মুজিবের গুগলিতে বোল্ড হয়েছেন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৭ বলে ১১ রান।

আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা ডেভিড মালান আজও শুরুটা দুর্দান্ত শুরু করেছিলেন। যতক্ষণ উইকেটে ছিলেন সাবলীল ছিলেন। ১৩তম ওভারে মোহাম্মদ নবির স্টাম্পের ওপরের নিচু হওয়া বলে বোকা বনেছেন। শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ দেওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৩৯ বলে ৩২ রান।

টপ অর্ডার ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে দলকে জয়ের পথে রাখার দায়িত্ব পড়েছিল জস বাটলারের ওপর। তবে অভিজ্ঞ এই ব্যাটারও পারেননি। ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে নাভিন উল হককে সোজা ব্যাটে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন বাটলার। ৯ রান করে এই উইকেটকিপার ব্যাটার ফেরায় একশ’র আগেই ৪ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড।

ছয়ে নেমে বাটলার-রুটদের পথেই হেঁটেছেন লিয়াম লিভিংস্টোন, উইকেটে এসে থিতু হয়েছেন ঠিকই কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১০ রান করা এই ব্যাটার রশিদের গুগলিতে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েছেন।

এরপর সাম কারান নবির বলে রহমতের তালু বন্দি হয়ে ফিরে যান। ২৩ বল মোকাবেলায় কুরানের ব্যাট থেকে আসে ১০ রান। দলীয় ১৬০ রানে ফিরে যান ক্রিস ওকস। মুজিবের বোল্ড হওয়ার আগে ২৬ বল মোকাবেলায় ৯ রান করেন ওকস।

এর মধ্যে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন হ্যারি ব্রুক। এই ব্যাটারকেও থামান মুজিব। মুজিবের বলে ইকরামের তালু বন্দি হন ব্রুক। এক ছক্কা ৭ চারে এই ইংলিশ ব্যাটার করে যান ৬৬ রান।

এরপর রশিদ খানের শিকার আদিল রশিদ (২০) ও মার্ক উড (১৮)।

মুজিব-উর রহমান ও রশিদ খান ৩টি করে উইকেট নেন। এছাড়া মোহম্মদ নবি ২টি এবং ফারুকি ও নাভেন ১টি করে উইকেট পান।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ইব্রাহিম জাদরানকে নিয়ে দুর্দান্ত সূচনা করেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। পাওয়ার প্লেতে বিশ্বকাপ ইতিহাসে নিজেদের সর্বোচ্চ ৭৯ রান তোলেন আফগানিস্তানের দুই ব্যাটার।

১১তম ওভারে ওয়ানডেতে তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন গুরবাজ। এজন্য ৩৩ বল খেলেন তিনি। বিশ^কাপে আফগানদের তৃতীয় ওপেনার হিসেবে অর্ধশতক করলেন গুরবাজ।

১৭তম ওভারে জাদরানকে ২৮ রানে থামিয়ে আফগানিস্তানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন স্পিনার আদিল রশিদ। ১০১ বলে বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের তৃতীয় সর্বোচ্চ ১১৪ রানের জুটি গড়েন গুরবাজ-জাদরান।

প্রথম উইকেট পতনের পর ৮ রানের ব্যবধানে আরও দুই ব্যাটারকে হারায় আফগানিস্তান। ১৯তম ওভারে তিন নম্বরে নামা রহমত শাহকে ৩ রানে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান রশিদ। একই ওভারে রান আউট হন গুরবাজ। ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে ৮টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৮০ রানে রান আউটের শিকার হয়ে থামেন গুরবাজ। বিশ^কাপে আফগানিস্তানের ওপেনার হিসেবে এটি সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান।

১১৪ রানের শুরুর পর ১২২ রানে তৃতীয় উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে আফগানিস্তান। এ অবস্থায় মিডল অর্ডার ব্যাটাররা বড় জুটির চেষ্টা করেও সফল হননি। এতে ১৯০ রানে ষষ্ঠ উইকেট পতন হয় তাদের। আজমতুল্লাহ ওমারজাই ১৯, অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শাহিদি ১৪ ও মোহাম্মদ নবি ৯ রানে আউট হন। অকশেনাল স্পিনার হিসেবে আগের ম্যাচের ভারতের বিপক্ষে ৮০ রান করা শাহিদিকে বোল্ড করেন জো রুট।

এরপর সপ্তম উইকেটে রশিদ খানকে নিয়ে ৪৮ বলে ৪৩ এবং অষ্টম উইকেটে মুজিব উর রহমানের সাথে ২৫ বলে ঝড়ো ৪৪ রান যোগ করেন ছয় নম্বরে নামা ইকরাম আলিখিল। এই দুই জুটির কল্যাণে ৪৯ দশমিক ৫ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২৮৪ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় আফগানিস্তান।

৩টি চারে রশিদ ২২ বলে ২৩ রান, ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় মুজিব ১৬ বলে ২৮ রান করেন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরির ইনিংসে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৬ বলে ৫৮ রান করেন আলিখিল।

ইংল্যান্ডের রশিদ ৪২ রানে ৩ এবং মার্ক উড ৫০ রানে ২ উইকেট নেন।

শেয়ার করুণ

Comments are closed.