টপ পোষ্ট

ঈদের দ্বিতীয় দিনে লোকারণ্য কক্সবাজার

0

টানা ছুটিতে ঈদের দ্বিতীয় দিনে কক্সবাজার সৈকত লোকে লোকারণ্যে পরিণত হয়েছে। বিকালে সূর্য হেলে পড়ার সাথে লাখো পর্যটক সৈকতের বালিয়াড়ি ও ঢেউয়ের তালে তালে নেচে-গেয়ে ঈদ আনন্দে মেতে উঠেছে। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগামী দুয়েকদিন আরও বাড়তে পারে পর্যটকের সংখ্যা।

‘ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ এর ধারণা মতে, এবারের ঈদের ৭ দিনের ছুটিতে প্রতিদিন কক্সবাজারে ২ লাখের বেশি পর্যটকের সমাগম হবে।

এদিকে বুধবার (৪ মে) বেলা ১১টার দিকে সমুদ্র সৈকতের কলাতলী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট, সীগাল পয়েন্ট, লাবণী পয়েন্ট ও কবিতা চত্বর পয়েন্ট থেকে হাজার হাজার পর্যটক সৈকতে নামেন।

আগত এসব দর্শনার্থী ও পর্যটকরা সমুদ্রস্নান, ঢেউয়ের সাথে টায়ার নিয়ে দুল খাওয়া, নীল জলে সাঁতার, ওয়াটার বাইক রাইডিংসহ প্রিয়জনের সঙ্গে সেফলি তুলে ঈদের আনন্দ উপভোগ করেছেন।

অনেকে সমুদ্রস্নানে গা ভিজিয়ে বালিয়াড়িতে বালুর সাথে গড়াগড়ি, বীচ বাইক রাইডিং ও ঘোড়াছুটসহ মনের সাথে মিশিয়ে আনন্দে মেতেছেন।

গাজীপুর থেকে সপরিবারে কক্সবাজার আসা নুর হোসেন বলেন, ‘এবাবের ঈদের ছুটিতে বেড়ানোর জন্য কক্সবাজারকে বেছে নিয়েছি। ঈদের দিন রাতেই বাস ধরে সকালে এসে কক্সবাজার পৌঁছাই আমরা। হোটেল আগে থেকে বুকিং করা ছিল। ৩ দিন থাকবো। আনন্দ করবো পরিবারের সাথে।

দিবাজপুর থেকে আসা শফিউল আলম বলেন, ‘গত এক বছর আগে থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ২০২২ সালের ঈদটা কক্সবাজার এসে কাটাবো। তাই স্ত্রী-সন্তান ও মা-বাবাকে নিয়ে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতে চলে এলাম। বরাবরের মতো এখানে এসে অনেক ভালো লাগছে। ঈদের আনন্দটা সাদা বালু ও নীল জলের সাথে সাথে উপভোগ করতে পেরে অনেক অনেক ভালো লাগছে।

চট্টগ্রামের মিরসরাই থেকে আসা মাহবুব চৌধুরী ও সুইটি নতুন দম্পতির প্রথম ঈদ উদযাপন কক্সবাজারে। ঈদের আনন্দটা উপভোগ করতে তারা চলে এলেন পর্যটন নগরীতে। কথা হয় তাদের সাথে। মাহবুব চৌধুরী ও সুইটি দম্পতি বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে কক্সবাজার আসার আগ্রহ ছিল। অবশেষে এই ঈদে কক্সবাজার আসলাম। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করলাম এবং স্পেশালি ভাজি-ভর্তা দিয়ে ভালো করে খেতে পারলাম। এখানে ঈদের সময়টা ভালোভাবে কাটছে।

এদিকে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ৭টি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে বসে পর্যটকের নিরাপত্তা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা।

ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানিয়েছেন, ঈদের ৭ দিনের ছুটিতে ১০ লাখের বেশি পর্যটকের সমাগম ঘটবে কক্সবাজারে। ইতোমধ্যে পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, গেস্টহাউসের ৯০ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম জানান, ঈদের প্রথম দিন থেকে সৈকতে পর্যটক ভিড় করতে শুরু করে । সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারাও সৈকত দর্শনে নেমেছেন।

ঈদের দ্বিতীয় দিনে সৈকতে ২ লাখ পর্যটক নেমেছেন বলে আমরা ধারণা করছি। এদিন সকাল থেকে পর্যটকরা সৈকতে নামতে শুরু করে। পর্যটকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ট্যুরিস্ট পুলিশ সবসময় আন্তরিক। কোনো অবস্থাতে যাতে অপরাধ ঘটতে না পারে আমরা সেই ব্যবস্থা নিয়েছি। যারা পর্যটন ঘিরে অপরাধ করার ইচ্ছাপোষণ করে আছে তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না। এ ব্যাপারে ট্যুরিস্ট পুলিশ যথেষ্ট সজাগ রয়েছে। সৈকতে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

এদিকে পর্যটকদের কাছ থেকে যেন কক্ষ ভাড়া বাবদ অতিরিক্ত টাকা আদায় না করতে পারে হোটেল মালিকরা সেজন্য ভাড়ার তালিকা টানানোর নির্দেশ দিয়েছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের পৃথক ৪টি ভ্রাম্যমাণ আদালত তৎপর থাকবে বলেও জানান তিনি।

শেয়ার করুণ

Comments are closed.