টপ পোষ্ট

ভারত-ইংল্যান্ড তৃতীয় টেস্টের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

0

বুধবার হেডিংলিতে শুরু হতে যাচ্ছে ভারত বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যকার তৃতীয় টেস্ট ম্যাচ। ৫ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে ভারত। লর্ডসে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ টেস্টের পঞ্চম ও শেষ দিনে নাটকীয় পারফর্মেন্সের মাধ্যমে ১৫১ রানের জয় নিশ্চিত করে সফরকারী দল।

লিডসের ম্যাচে তাই বেশ কয়েকটি বিষয় বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনটি দিক বিষয় হতে পারে:

ভারতীয় পেসারদের দক্ষতা: ইংল্যান্ডের মাটিতে ১৯৭১ সালে ভারতের প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ে টিম ইন্ডিয়ার আক্রমণ ভাগের নেতৃত্বে ছিল স্পিনাররা। ১-০ ব্যবধানে জয় পাওয়া তিন ম্যাচের সিরিজটিতে ৩৭ উইকেট ভাগ করে নিয়েছিলেন ভারতের শ্রীনিবাস ভেঙ্কটারাঘবন, ভাগবত চন্দ্রশেখর এবং বাহাতি বিষেন শিং বেদি।

তারপর কেটে গেছে ৫০টি বছর। পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। চলতি সিরিজে দুই টেস্ট শেষেই ভারতীয় পেসাররা তুলে নিয়েছেন ৩৯টি উইকেট (তন্মধ্যে অবশ্য একটি রানআউটও আছে)। দুই ম্যাচেই রবীন্দ্র জাদেজার অংশগ্রহণ থাকলেও এর মধ্যে একটি উইকেটও পায়নি স্পিনাররা।

ভারতের তারকা অফ-স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন সাইডলাইনে থেকে গেলেও ডানহাতি সব পেসাররাই দারুণ বৈচিত্র্যময় আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছেন। জাসপ্রিত বুমরাহ’র নেতৃত্বাধীন পেস আক্রমণে আলো ছড়িয়েছেন মোহাম্মদ শামির নির্ভুল বোলিং কিংবা মোহাম্মদ সিরাজের সুইং।

লর্ডসে আট উইকেট শিকার করে ভারতীয় আক্রমণের নেতৃত্ব দিয়েছেন তরুণ সিরাজ। তার প্রশংসা করতে গিয়ে ইংল্যান্ডের সাবেক ফাস্ট বোলার স্টিভ হার্মিসন ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে বলেন, ‘তিনি হচ্ছেন ডুরাসেল ব্যাটারি। মোহাম্মদ সিরাজ, প্রথম বল থেকে শেষ বল পর্যন্ত একই রকম। তিনি বলকে পিচ করেন আবার সুইংও করান।’

ব্যাটিংয়ের মতো এখন ভারতীয় পুরো বোলিং বিভাগেই রয়েছে দারুণ গভীরতা। পেস বোলিং অলরাউন্ডার শার্দূল ঠাকুর ইনজুরিতে পড়ে নটিংহ্যামের প্রথম টেস্ট থেকে বিদায় নিলে তার স্থলাভিষিক্ত হয়ে লর্ডসে ৫ উইকেট শিকার করেছেন ইশান্ত শর্মা।

অন্যদিকে ইংল্যান্ডে দলের বাইরে আছেন স্টুয়ার্ট ব্রড, জোফরা আর্চার, ওলিয়ে স্টোন ও ক্রিস ওকস। এদিকে মানসিক স্বাস্থ্যগত কারণে ইংলিশ দলের বাইরে রয়েছেন তারকা অল রাউন্ডার বেন স্টোকস। আর এবার শেষ মুহূর্তে দল থেকে ছিটকে গেলেন আরেক পেসার মার্ক উড।

রুটের একক প্রতিরোধ: লংগার ভার্সনে টানা সাত ম্যাচে জয়হীন থাকা ইংল্যান্ড দলের একমাত্র টেস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে অধিনায়ক জো রুটের জন্য এই বছরটি হতে পারে সেরা বছরগুলোর একটি। এই সিরিজে ১২৮.৬৬ ব্যাটিং গড়ে এ পর্যন্ত ৬৬১ রান করেছেন তিনি। যার মধ্যে সেঞ্চুরি রয়েছে দুটি।

ব্যাট হাতে ব্যর্থতার কারণে হেডিংলি টেস্টে ওপেনার ডম সিবলিকে বাদ দিয়েছে ইংল্যান্ড। স্বল্প স্কোরের কারণে এই বছর দশ টেস্টে তার ব্যাটিং গড় নেমে এসেছে ১৯.৭৭-এ। পরিবর্তে ডাক পেয়েছেন ডেভিড মালান।

তিন নম্বর পজিশনের ব্যাটসম্যান হিসেবে লর্ডসে ফিরে মাত্র ৯ রান সংগ্রহ করা হাসিব হামিদ এখন ররি বার্নসের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নামতে পারেন। ওয়ান ডাউনে ব্যাটিংয়ে আসতে পারেন মালান। আর নিজের প্রিয় চতুর্থ নম্বরেই ব্যাটিং করবেন জো রুট।

লর্ডসে মাত্র ২৩ রানে দুই উইকেট হারিয়ে ফেলা ইংল্যান্ড দলের হয়ে অপরাজিত ১৮০ রানের একটি নজরকাড়া ইনিংস খেলেছেন ইংলিশ অধিনায়ক। আর দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১ রানে দুই উইকেট খুইয়ে ফেলা দলটির হয়ে সর্বোচ্চ ৩৩ রানও এসেছে তার ব্যাট থেকেই। যদিও দ্বিতীয় ইনিংসে ১২০ রানেই অল আউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা। চার নম্বরের ব্যাটসম্যান হলেও রুট যতবারই ক্রিজে এসেছেন ততবারই ইংলিশদের সংগ্রহ ছিল ৫০ রানের নিচে।

যদিও লর্ডসে ইংল্যান্ডের টেলএন্ডার জেমস অ্যান্ডারসন বেশ সাহসিকতার সঙ্গেই শামি ও বুমরাহকে মোকাবেলা করেছেন। শেষ দিনে নবম উইকেট জুটিতে তিনি অপরাজিত ৮৯ রানের যোগান দিয়েছেন।

কোহলির আগ্রাসন: প্রতিপক্ষ দলকে নড়বড়ে করে দিতে ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলির আগ্রাসী আচরণই যথেষ্ট। তবে স্লেজিং না করার কৌশল অবলম্বন করছেন কোহলি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনালেই তিনি কৌশলটি অবলম্বন করেন। কারণ তিনি জানতেন কেন উইলিয়ামসের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের বিপক্ষে স্লেজিং একেবারেই অর্থহীন। ফলস্বরুপ, ওই ম্যাচে হেরে গিয়েছিল ভারত।

অবশ্য সব দলই নিউজিল্যান্ড নয়। তবে কোহলির এই কৌশল সিরিজের বাকী ম্যাচগুলোতে ঠান্ডা মাথায় খেলার জন্য ইংল্যান্ড দলকে সহায়তা করবে বলেই আশা করা যাচ্ছে।

শেয়ার করুণ

Comments are closed.