টপ পোষ্ট

মাস্ক নিয়ে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

0

এন-৯৫ মাস্কের বক্সে কোন মাস্ক সরবরাহ করা হচ্ছে সে বিষয়ে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (২০ এপ্রিল) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

এসময় প্রধানমন্ত্রী ঢাকা বিভাগের চারটি এবং ময়মনসিংহ বিভাগের সবকটি জেলার সঙ্গে মতবিনিময় করেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরাও এসময় যুক্ত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বক্সে লেখা আছে এন-৯৫, কিন্তু সবসময় জিনিসটা সঠিক যাচ্ছে না। এটা তো ঠিক নয়। এদিকে নজর দিতে হবে। বক্সের ভেতরের জিনিসগুলো ঠিক আছে কিনা, তা দেখে শুনে গ্রহণ করতে হবে।

এসময় কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহীদুল্লাহ বলেন, এন-৯৫ মাস্ক সহজলভ্য না। এর সমপর্যায়ের কেএন-৯৫ মাস্ক রয়েছে। যা সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর। আমাদের কাছে দুই লাখ কেএন-৯৫ এফএফপিটু এসেছে। এগুলো বিভিন্ন কোভিড হাসপাতাল, পিসিআর ল্যাবের সুরক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এটা পর্যাপ্ত, সংশ্লিষ্ট স্থানে এই সপ্তাহের মধ্যে পৌঁছে যাবে। আর আমাদের কাছে কিটও পর্যাপ্ত রয়েছে।

এছাড়া তাদের কাছে সংরক্ষিত পারসোনাল প্রোটেক্টিভ ইক্যুইপমেন্টের (পিপিই) মধ্যে ৭০ শতাংশ দেশে উৎপাদিত আর বাকি ৩০ শতাংশ চীন থেকে আমদানি করা বলেও জানান সিএমএসডি পরিচালক।

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আমাদের মন্ত্রীর (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) কাছে কিছু ছবি পাঠিয়েছি। যারা সাপ্লাই দেয়, তারা সঠিকভাবে সবকিছু দিচ্ছে কিনা? মহানগর হাসপাতালে কিছু জিনিস গিয়েছে। নাম দিচ্ছে ভালো, কিন্তু সঠিকভাবে ঠিক জিনিসগুলো যায়নি। এটা আপনাদের দেখা উচিত। আপনারা দিয়ে দিচ্ছেন, বলে দিচ্ছেন। কিন্তু যারা সাপ্লায়ার তারা ঠিকভাবে দিচ্ছে কিনা, কিংবা সঠিক জিনিসটা কিনছে কিনা, এটা দেখা দরকার, এটা দেখবেন। এটা নিয়ে আমি বেশি কিছু বলতে চাই না। আমি মন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি ছবিটা, এটা যাচাই করে দেখার জন্য।

পরে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহীদুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের কেন্দ্রীয় ঔষধাগারসহ একটা কমিটি করা আছে। যারা এই সরবরাহ ও তার কারিগরি দিক পরীক্ষা করবে। ইতোমধ্যে আমরা প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার পিপিই নিম্নমানের হওয়ায় নষ্ট করেছি। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। হয়তো জরুরি প্রয়োজন মেটাতে আমাদের ভুল হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু এখন আমারা চাচ্ছি, আমাদের এই ভুলগুলো যাতে না হয়। সঠিকভাবে বিতরণটা করতে পারি, সেই উদ্যোগ আমরা নিয়েছি।

পরে প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগত মোবাইলের দিকে তাকিয়ে বলেন, এন৯৫ লেখা বক্স, কিন্তু ভেতরে যে জিনিস, সেটা সঠিক থাকে কিনা, এটা একটু আপনাদের দেখা দরকার, একটু নজর দেন। যেহেতু এখন লাইভে আছেন, আমরা কথা বলছি। লেখা আছে এন৯৫ কিন্তু সবসময় জিনিসটা সঠিক যাচ্ছে না। এর সাপ্লায়ার কে? মহানগর হাসপাতালে (বাবুবাজার) এটা গেছে, এটাতো কোভিডের জন্য ডেডিকেটেড। যদি এটা কিছু কিছু জায়গায় হয়, তাহলেতো তা ঠিক না। বক্সতো ঠিক আছে, কিন্তু বক্সের ভেতরের জিনিসগুলো ঠিক আছে কিনা সেটার জন্য নজরদারিটা বাড়ানোর প্রয়োজন, বা যিনি এটা গ্রহণ করবেন, তিনি যেন দেখে-শুনে তা গ্রহণ করেন। খালি আমি এইটুকু বলতে চাই।

সম্প্রতি চিকিৎসা সংশ্লিষ্টদের জন্য সরকারিভাবে সরবরাহকৃত পিপিই নিয়ে নানা ধরনের অভিযোগ ওঠে। চিকিৎসক ও নার্সরা নিম্ন মানের পিপিই সরবরাহের অভিযোগ করেন। বিশেষ করে এন-৯৫ এর বদলে নিম্ন মানের মাস্ক সরবরাহের অভিযোগ করেন তারা।

এছাড়া সুকাভার, হেড কাভারসহ অন্য সরঞ্জাম, পিপিই সেটে না থাকারও অভিযোগ করেন। একবার ব্যবহারযোগ্য পিপিই সেট, বারবার ওয়াশ করে ব্যবহার করছেন বলেও অভিযোগ করেন চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা।

এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশ হয়। তবে সরকারি হাসপাতালগুলোতে সরবরাহকৃত মাস্ক ও পিপিই সেট নিয়ে অসত্য তথ্য প্রচার করা হচ্ছে বলে দাবি করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের আওতাধীন কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি) কর্তৃপক্ষ একটি গণবিজ্ঞপ্তি দেয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে মাস্ক ও পিপিই নিয়ে অপপ্রচার বন্ধ করা না হলে ‘ডিজিটাল তথ্য আইন’ অনুযায়ী মামলা করারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

ভিডিও কনফারেন্সে স্বাস্থ্য সচিব মো. আসাদুল ইসলাম জানান, কিশোরগঞ্জ ও গাজীপুর জেলায় করোনা টেস্টের পিসিআর ল্যাব স্থাপনের কাজ চলছে। তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতায়াতের জন্য মাইক্রোবাস নির্দিষ্ট করা আছে। এটা ঠিকমতো কাজ করছে কিনা সে বিষয়ে আমরা নজর দেবো। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আরও সমন্বয় করা হবে।

শেয়ার করুণ

Comments are closed.