টপ পোষ্ট

ইরানের আরও দুই মন্ত্রী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত

0

বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করা প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে এখন পর্যন্ত দুই সংসদ সদস্য, এক রাষ্ট্রদূত ও সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনির উপদেষ্টাসহ ৩৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। যেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৬২ জন।

দেশটির সবপ্রদেশে ছড়িয়ে পড়া করোনায়ে এবার নতুন করে আরও এক হাজার নাগরিক আক্রান্ত হয়েছেন। যেখানে আছেন দুই মন্ত্রী ও এক ভাইস প্রেসিডেন্ট। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত করোনার প্রকোপে পড়েছন ৯ হাজারের অধিক মানুষ।

ইরানের আধাসরকারি সংবাদ সংস্থা ফার্স নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হস্তশিল্প, পর্যটন ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবিষয়ক মন্ত্রী আলী আসগর মুনসিন এবং শিল্প, খনিজ ও বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রী রেজা রাহমানি প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এই সংক্রমণ নিয়ে দেশটির সরকারি গণমাধ্যমে কোনো খবর প্রকাশিত হয়নি।

এদিকে বেশ কয়েক দিন ধরেই ইশাক জাহাঙ্গিরির স্বাস্থ্য ভালো যাচ্ছিল না। তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা চলছিল। সাম্প্রতিক শীর্ষপর্যায়ের বৈঠকগুলোতে তাকে দেখা যায়নি। এসবের মধ্যেই বুধবার এমন খবর এসেছে।

এর আগে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রথম দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের মধ্যে সাবেক রাষ্ট্রদূত হাদি খোসরোশাহী মারা যান। এরপর থেকে একের পর এক আক্রান্ত হতে থাকেন অন্যান্য সাংসদ ও উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

এরই ধারাবাহিতায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলি রামাজানি দস্তাক (২৯ ফেব্রুয়ারি), সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির শীর্ষ উপদেষ্টা মোহাম্মদ মীর মোহাম্মদী (৬ মার্চ) ও নারী সাংসদ ফাতেমেহ রাহবার (৭ মার্চ)। যিনি কয়েকদিন আগেই অনুষ্ঠিত ইরানের পার্লামেন্ট নির্বাচনে তেহরান থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন।

শুধু তাই নয়, ইরানের ৭ ভাগ আইনপ্রণেতা প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে দ্রুতগতিতে ভাইরাসটি ছড়াতে থাকায় বেশ কয়েকটি দেশ ইরানের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।

চলমান ভয়াবহ পরিস্থিতি বিবেচনা করে তেহরানও ইতিমধ্যে কয়েকটি বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটির নাগরিকদের জন্য। এমনকি করোনার প্রকোপ থেকে বাঁচতে কারাগারে থাকা ৫৪ হাজার বন্দীকে সাময়িকভাবে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এদিকে, বুধবার রাতে বিশ্বব্যাপী করোনাকে মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এর আগে জরুরি অবস্থা জারি করেছিল সংস্থাটি।

তারপরও থেমেই মৃত্যুর মিছিল। উৎপত্তিস্থল চীন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসলেও গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে আক্রান্তদের মধ্যে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে দেশটির ৩ হাজার ১৬৯ জন নাগরিক প্রাণ হারালেন। আর বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ৬শ ছাড়িয়েছে। যেখানে আক্রান্ত আছেন বিশ্বের ১১৪টি দেশের ১ লাখ ২৩ হাজার মানুষ।

চীনের বাহিরে সবচেয়ে করুণ অবস্থা ইউরোপীয় রাষ্ট্র ইতালির। দেশটির ৬ কোটির বেশি মানুষকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হলেও থামছে না আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ১৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে রাজধানী রোমসহ অন্যান্য অঞ্চলের ৮২৭ জনের প্রাণহানি ঘটল। ফলে দেশটি পুরোপুরি অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।

এদিকে, চলমান পরিস্থিতি মোকাবেলা ইউরোপীয় ৩০টি দেশের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর দেশের ৭০ শতাংশ নাগরিক করোনায় আক্রান্ত হতে পারে ধারণা করছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল।

শেয়ার করুণ

Comments are closed.