টপ পোষ্ট

বিমানবন্দরে আক্রান্তদের সনাক্ত করতে পারেনি ‘থার্মাল স্ক্যানার’

0

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সনাক্ত করা হয়েছে প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ৩ রোগী। তবে এই আক্রান্তদের সনাক্ত করতে পারেনি বিমানবন্দরে ব্যবহৃত থার্মাল স্ক্যানার মেশিন। উল্টো রোগীরাই হটলাইনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজেদের তথ্য দিয়েছেন।

রোববার (৭ মার্চ) বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত ওই ৩ বাংলাদেশির মধ্যে দু’জন সম্প্রতি ইতালি থেকে ফিরেছেন। তাদের মধ্যে একজন নারী ও দুইজন পুরুষ। এদের দুইজন আবার একই পরিবারের সদস্য।’

তিনি বলেন, ‘জ্বর ও কাশি নিয়ে এই তিন ব্যক্তি আইইডিসিআরে যোগাযোগ করেন। এরপর গত ২৪ ঘণ্টায় তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় তারা পজিটিভ প্রমাণিত হন।’

তবে এতে সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, এখন পর্যন্ত তিনজন আক্রান্ত হয়েছে। এতে করে সারা বাংলাদেশে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে এমন কিছু বলা যাবে না। স্কুল-কলেজ বন্ধ করার প্রয়োজন নেই। জনসমাগমের মধ্যে না যেতে পরামর্শ দেব, বাসাতে থাকাই ভালো।

করণীয় কী?

করণীয় বিষয়ে আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়া ও কাশি শিষ্টাচার মেনে চলার বিকল্প নেই। এজন্য গণমাধ্যমসহ দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

সেব্রিনা ফ্লোরা আরও বলেন, আমরা সব সময় বলেছি, প্রস্তুতির কোনও শেষ নাই। আমরা আইসোলেশন ইউনিট করেছিলাম। এখন আইসোলেটেড হসপিটাল আইডেন্টিফাই করছি। এই আইসোলেটেড হসপিটালগুলো ঢাকার বাইরেও আইডেনটিফাই করা হচ্ছে। এর পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে যদি রোগী আরও বৃদ্ধি পায়, আমরা আশঙ্কা করছি না এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। কিন্তু যদি রোগী আরও বৃদ্ধি পায়, স্কুল কলেজ বা কমিউনিটি সেন্টারে যদি হাসপাতাল করার প্রয়োজন হয়, সেই পরিকল্পনা আমাদের নেয়া আছে।

এদিকে, জানা গেছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্তে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনটি থার্মাল স্ক্যানারের দুটিই নষ্ট। সচল রয়েছে মাত্র একটি স্ক্যানার। অন্যদিকে, ভিআইপি যাত্রীদের যাতায়াতের স্থানে থাকা থার্মাল স্ক্যানারটিও নষ্ট। ভিআইপিদের হ্যান্ডহেল্ড স্ক্যানার দিয়ে তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে মাত্র। আর সাধারণ যাত্রীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে একটিমাত্র স্ক্যানার দিয়েই।

এ বিষয়ে শাহজালাল বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, একটি থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। দুটি থার্মাল স্ক্যানার নষ্ট থাকায় হ্যান্ডহেল্ড স্ক্যানার মেশিনও ব্যবহার করা হচ্ছে।

এর আগে ২০১৪ সালে বিশ্বজুড়ে ইবোলা সংক্রমণ শুরু হলে ওই বছরের নভেম্বরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বসানো হয় তিনটি থার্মাল স্ক্যানার মেশিন। যেগুলোর মধ্যে একটি ভিআইপি জোনে, বাকি দুটি বসানো হয় সাধারণ যাত্রীদের যাতায়াতের স্থানে।

তবে বিভিন্ন সময়ে এই থার্মাল স্ক্যানারগুলো বিকল হয়ে পড়ে। ২০১৬ সালে জিকা ভাইরাসের আতঙ্ক শুরু হলে সে সময়ও শাহজালাল বিমানবন্দরের দুটি স্ক্যানার মেশিন বিকল হয়ে পড়ে। এ কারণে তখন যাত্রীদের সাধারণ থার্মোমিটারের মাধ্যমে জ্বর মাপা হয়েছিল।

অন্যদিক, চট্টগ্রামের শাহ আমানত ও সিলেটের ওসমানী- এই দুটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি করে থার্মাল স্ক্যানার থাকলেও বিকল অবস্থায় আছে দুটিই। তাই এ দুই বিমানবন্দরে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত শনাক্তের কাজ চলছে কেবল হ্যান্ডহেল্ড স্ক্যানারের মাধ্যমেই।

শেয়ার করুণ

Comments are closed.