টপ পোষ্ট

কানাডায় চীনের ‘হস্তক্ষেপ’, শির কাছে ট্রুডোর উদ্বেগ প্রকাশ

0

কানাডার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে চীনের সন্দেহজনক হস্তক্ষেপের বিষয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।

গত মঙ্গলবার তিন বছরের বেশি সময়ের মধ্যে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে প্রথমবার আলোচনায় এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন ট্রুডো। কানাডা সরকারের একটি সূত্রের বরাতে এই খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

গত ৭ নভেম্বর কানাডিয়ান সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের রেফারেন্সে এই ‘হস্তক্ষেপের’ কথা বলা হয়। ওই প্রতিবেদনে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে বলা হয়, তারা সন্দেহ করছেন ২০১৯ সালের কানাডার নির্বাচনে চীন হস্তক্ষেপ করেছে। এ ছাড়া কানাডার বৃহত্তম বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানির এক কর্মীকে সোমবার আটক করেছে কানাডিয়ান পুলিশ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি চীনকে দিতে কানাডার ব্যবসা সংক্রান্ত গোপন তথ্য চুরির চেষ্টা করছিলেন।

কানাডার সরকারি সূত্রটি বলছে, ইন্দোনেশিয়ার বালিতে আয়োজিত জি-২০ সম্মেলনের সাইডলাইনে অনুষ্ঠিত শির সঙ্গে এক বৈঠকে কানাডার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে চীনের ‘হস্তক্ষেপমূলক কর্মকাণ্ডের’ ব্যাপারে আলোচনা করেন ট্রুডো। তবে অটোয়ায় অবস্থিত চীনের দূতাবাস ওই বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি বা কি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে তা নিয়েও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও ট্রুডোর পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা রোল্যান্ড প্যারিস বলেন, কানাডার গোয়েন্দা সংস্থা সাধারণত প্রকাশ্যে তেমন কথা বলে না। তারা উদ্বেগ জানিয়েছে। কানাডার গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে এই জন্য কানাডা সরকারকে অতিরিক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।

এদিকে সরকারি ওই সূত্রটি আরও বলেছে, বৈঠকে উত্তর কোরিয়া, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান এবং আগামী ডিসেম্বরে ‘প্রকৃতি সুরক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে’ মন্ট্রিলে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনের গুরুত্ব নিয়ে শির সঙ্গে ট্রুডোর আলোচনা হয়।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৯ সালের জুনে জাপানের ওসাকায় অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনের সাইডলাইনে সর্বশেষ শির সঙ্গে ট্রুডোর সাক্ষাৎ হয়েছিল। এছাড়া তাদের মধ্যে আরও তিনবার সাক্ষাৎ হয়। এর মধ্যে একবার ২০১৫ সালে তুরস্কে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনের সাইডলাইনে এবং ২০১৬ ও ১৭ সালে বেইজিংয়ে ট্রুডোর সরকারি সফরের সময়।

এদিকে একটি ছবিতে দেখা যায় ভীড়ের মধ্যে এই দুই নেতা মুখোমুখি হয়ে আছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই সময় তারা নিজেদের মধ্যে প্রায় ১০ মিনিট আলোচনা করেন। তাদের এই আলোচনাকে সোমবারে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে শির সাড়ে তিন ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠকের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

এই বৈঠকের ব্যাপারে অধ্যাপক প্যারিস বলেন, আমরা এমন একটি সম্পর্কের কথা বলছি যেটি বছরের পর বছর শীতল অবস্থায় আছে। তাই শীর্ষ নেতা পর্যায়ের প্রথম বৈঠক অনানুষ্ঠানিক হওয়াটা আশ্চর্যজনক কিছু নয়।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে হুয়াওয়ে টেকনোলজির নির্বাহী মেং ওয়ানঝুকে আটকের পর চীনের সঙ্গে কানাডার কূটনৈতিক উত্তেজনা চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। পরবর্তীতে বেইজিং গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে দুই কানাডিয়ানকে আটক করে। গত বছর দুই পক্ষের ওই তিন ব্যক্তিকে মুক্তির মধ্য দিয়ে সেই অচলাবস্থা কাটে। যদিও দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক তিক্তই রয়ে গেছে। যেমন জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগের কথা বলে গত মে মাসে হুয়াওয়ে থেকে ফাইভ জি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেয় অটোয়া এবং চলতি মাসের শুরুতে চীনের তিনটি কোম্পানিকে কানাডার গুরুত্বপূর্ণ লিথিয়াম খনি থেকে বহিষ্কার করে।

শেয়ার করুণ

Comments are closed.