টপ পোষ্ট

‘ভয়হীন ক্রিকেট’ ও ‘দলগত সংস্কৃতি’কেই প্রাধান্য দিচ্ছেন সোহান

0

বাংলাদেশের নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান চান তার দল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে “ভয়হীন ক্রিকেট” খেলুক। রোববার অধিনায়ক হিসাবে সোহান তার প্রথম সংবাদ সম্মেলনে নিজের চিন্তা-ভাবনার একটা আভাস দিয়ে এমন কথা বলেন।

সোহান একটা লড়াকু দলের নেতৃত্ব দিতে চান। যদিও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে নিজের পারফরম্যান্স সম্পর্কে এদিন আসা কঠিন প্রশ্নগুলো এড়িয়ে যান তিনি।

৩০ জুলাই থেকে শুরু হওয়া জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য সম্প্রতি সোহানকেই অধিনায়ক মনোনীত করেছে বিসিবি। যার ফলে এই উইকেট কিপার ব্যাটার ২০১৯ সাল থেকে দায়িত্বে থাকা মাহমুদউল্লাহর স্থলাভিষিক্ত হন।

তবে একটা বড় উদ্বেগের বিষয় হলো- বাংলাদেশ তাদের শেষ ১৩টি টি-টোয়েন্টির মধ্যে মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছে এবং এই ফরম্যাটে অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে।

এই জিম্বাবুয়ে সফর থেকে বিশ্রাম নেয়া সাকিব আল হাসান আগামী মাসে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে দায়িত্ব নেয়ার আগে নুরুল হাসান সোহানকে অনেকটা বিকল্প হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে।

তবে নিজের কাঁধে আসা এই দায়িত্বকে বেশ গুরুত্ব সহকারেই নিচ্ছেন সোহান। মাঠের বাইরে লাজুক আচরণের সোহান মাঠে ঠিকই আগ্রাসনের জন্য পরিচিত।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিকতম সিরিজে শুধুমাত্র টি-টোয়েন্টি সেটআপে ফিরে আসা একজন ক্রিকেটারের জন্য এমন একটি দলের নেতৃত্ব দেয়া একটা বড় চ্যালেঞ্জই বটে। কারণ তার ওপর অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। যেমনটা তিনি বলেছিলেন, খুব বেশি উত্তেজিত না হওয়ার বৈশিষ্ট্যটি অধিনায়ক হিসাবে তার পক্ষে কার্যকর হবে।

সোহান বলেন, নির্ভীক ক্রিকেট খেলাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। “কারণ এটা আরও সুযোগ তৈরি করে দেয়। আমরাও আমাদের প্রক্রিয়ায় লেগে থাকতে চাই কিন্তু আমরা খুব বেশি এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করতে পারি না।”

তিনি বলেন, অধিনায়কত্ব অবশ্যই গর্বের বিষয়, কিন্তু আমি সামনের চ্যালেঞ্জ নিয়েই বেশি ভাবছি। প্রতিটি স্তরে আমি দলকে নেতৃত্ব দিয়েছি, আমি খেলোয়াড়দের একটি দল হিসেবে খেলার প্রচেষ্টা চালিয়েছি। আমি এটাকেই দলের ‘প্রধান সংস্কৃতি’ হিসেবে অব্যাহত রাখতে চাই।

সোহান বলেন, “আমার মধ্যে খুব কমই প্রত্যাশা এবং উত্তেজনা কাজ করে। আমি ফলাফল বা অতীত নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করি না। এই জিনিসগুলো আমার কাছে আসলেই কোনো ব্যাপার না। আমি অনেকদিন ধরেই সফলতার সাথে এটা মোকাবিলা করছি।”

আগের নেতাদের কাছ থেকে যা শিখেছেন তার সেরা বিষয়গুলো তিনি কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন বলেই জানান সোহান। তবে তিনি বিশ্বাস করেন যে, অধিনায়কদের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে।

নুরুল হাসান বলেন, রিয়াদ ভাইয়ের (মাহমুদুল্লাহ) অধীনে খেলে আমি অনেক কিছু শিখেছি। ‘আমি আমাদের সব অধিনায়কের কাছ থেকেই শিখেছি, যাদের সবাই একেবারেই আলাদা। আমি সেই অভিজ্ঞতাগুলোর প্রত্যেকটি থেকে কিছু না কিছু নিয়ে কাজ করতে চাই।’

ব্যাট হাতে নুরুলের টি-টোয়েন্টি রেকর্ড অবশ্য পরিমিত। এখন পর্যন্ত ২৯ ইনিংসে ১২.৯০ গড়ে রান করেছেন ২৭১টি যেখানে তার স্ট্রাইক রেট ১১১.৯৮। অপরাজিত ৩০ রানই তার সর্বোচ্চ স্কোর। তবে তিনি মনে করেন, এই সংখ্যাগুলো আসলে তার অবদানের পরিমাণ প্রতিফলিত করে না।

সোহান বলছিলেন, ‘আমি যে ধরনের ব্যাটিং করি, আমার স্কোর প্রায়শই যা শো করে তার চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। আমি হয়তো ১৫-২০ রান করে করেছি কিন্তু এটা দলের জন্য প্রত্যক্ষ ফলাফল বয়ে এনেছে। আমি সেই ধারাই চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব।’

এদিকে, জিম্বাবুয়ে সফরে নতুন অধিনায়ককে বেঁছে নেয়ার পর ব্যক্তি নুরুলের কাছ থেকে দায়িত্ব নেয়ার জন্য ব্যাপকভাবে পরামর্শ দেন সাকিব আল হাসান।

টেস্ট অধিনায়ক বলেন, ‘আমি মনে করি সে একজন যোগ্য অধিনায়ক। বিসিবিও মনে করে সে বাংলাদেশ দলের হয়ে ভবিষ্যতে অবদান রাখতে পারে, এজন্যই তারা তাকে অধিনায়ক করেছে। আমি তার মঙ্গল কামনা করছি। আমি আশা করি, সে জিম্বাবুয়ের চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে পারবে।”

শেয়ার করুণ

Comments are closed.