টপ পোষ্ট

ড্রাগন ফলের দশ গুণ

0

ড্রাগন এক ধরনের ক্যাকটাস ভিত্তিক ফল। এটি আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারি। ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ড্রাগন ফ্রুট হজমে সহায়তা করে। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই ফল। বর্তমানে বাংলাদেশে ড্রাগন ফ্রুটের চাহিদা বাড়ছে, তাই উৎপাদনও বাড়ছে।

এই ফলটিকে দুই ভাগে কেটে, খুব সহজেই চামচ দিয়ে ভিতরের শাঁস খাওয়া যেতে পারে। তাছাড়া মিল্কশেক, কিংবা স্মুদি তৈরি করেও ড্রাগন ফ্রুট উপভোগ করা যেতে পারে। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক এই ফলের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে।

১)  ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ একটি ফল ড্রাগন ফ্রুট। এর ক্যালরির মাত্রাও তুলনামূলক কম। এতে যথেষ্ট পরিমাণে ডায়েটরি ফাইবার রয়েছে। এক কাপ ড্রাগন ফ্রুটে ক্যালোরির মাত্রা ১৩৬, প্রোটিনের মাত্রা ৩ গ্রাম, ফ্যাটের মাত্রা শূন্য, ফাইবারের মাত্রা ৭ গ্রাম, আয়রনের মাত্রা ৮ শতাংশ, ম্যাগনেসিয়ামের মাত্রা ১৮ শতাংশ, ভিটামিন-সি এর মাত্রা ৯ শতাংশ, ভিটামিন-ই এর মাত্রা ৪ শতাংশ।

২) অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল এটি। ফ্ল্যাভোনয়েড, ফেনোলিক অ্যাসিড এবং বিটাসায়ানিন-এর মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে রয়েছে এতে। এই প্রাকৃতিক পদার্থগুলি আপনার কোষগুলিকে ফ্রি ব়্যাডিক্যালের হাত থেকে রক্ষা করে। এটি এক প্রকার অণু, যা ক্যান্সার এবং অকাল বার্ধক্যের মতো রোগের কারণ হতে পারে।

৩) ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও কমায় ড্রাগন ফল। এটি ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায়, এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। এই ফলের নিয়মিত সেবন, রক্তে শর্করার ভারসাম্যতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।

৪) ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় এই ফল। এতে ক্যান্সার বিরোধী বৈশিষ্ট্য বর্তমান। এটি কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে অত্যন্ত সহায়ক। তাছাড়া এই ফল ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তুলতেও সহায়তা করে। এটি বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগ যেমন ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, অ্যালজাইমার এবং পারকিনসন এর মতো রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।

৫) হজমের জন্য ভাল এই ফল। এটি শরীরে ভাল ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে, যার ফলে হজম ক্ষমতাও ভাল হয়। তাছাড়া এটি ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায়, পরিপাকতন্ত্রকে ভাল রাখতে সহায়তা করে।

৬) হার্টের জন্য উপকারি ড্রাগন ফ্রুট। এর ক্ষুদ্র কালো বীজগুলি, ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৯  ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। এগুলি হার্টের জন্য খুবই ভাল এবং কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ এর ঝুঁকি কমায়। তাই ড্রাগন ফল খাওয়া হার্টের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারি। এটি হার্ট ভাল রাখার পাশাপাশি, রক্তচাপ ও ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে।

৭) অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা, চাপ, দূষণ এবং খারাপ খাদ্যাভ্যাসের কারণে অকাল বার্ধক্যের সমস্যা আজ খুব সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ড্রাগন ফ্রুট ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ হওয়ায়, এটি ত্বককে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তুলতে সহায়তা করে। তাই ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে, দিনে একবার এর জুস খেতেই পারেন। এছাড়া, এটি চুলের জন্য খুব উপকারি।

৮) হাড়ের জন্য ভাল ড্রাগন ফ্রুট। এর প্রায় ১৮ শতাংশ ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে, যা হাড়কে শক্তিশালী করে তোলে এবং হাড়ের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। ফলে জয়েন্টের ব্যথা, ফ্র্যাকচার কিংবা ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকিও অনেকটাই কমে যায়।

৯) চোখের ক্ষেত্রে উপকারি ড্রাগন ফ্রুট। এতে বিটা-ক্যারোটিন রয়েছে। তাই, এই ফল চোখের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ছানি পড়ে যাওয়া এবং ম্যাকুলার ডিজেনারেশন প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।

১০) গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে উপকারি এই ফল। এতে ভিটামিন বি, ফোলেট এবং আয়রন রয়েছে, তাই এটি গর্ভবতীদের জন্য আদর্শ ফল। ভিটামিন বি এবং ফোলেট নবজাতকের জন্মগত ত্রুটি রোধ করতে সহায়তা করে এবং গর্ভাবস্থায় শক্তি সরবরাহ করে। তাছাড়া এতে থাকা ক্যালসিয়াম ভ্রূণের হাড়ের বিকাশের জন্য অত্যন্ত উপকারি। এতে ম্যাগনেসিয়ামও রয়েছে, যা মহিলাদের পোস্টমেনোপজাল জটিলতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে।

সূত্র: বোল্ডস্কাই

শেয়ার করুণ

Comments are closed.