টপ পোষ্ট

ভারতে এক সপ্তাহে আক্রান্ত লক্ষাধিক!

0

ভারতে পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে গেল সংক্রমণ। এর মধ্যে এক থেকে দুই লাখ ১৫ দিন। দুই থেকে তিন ১০ দিন। তিন থেকে চার ৮ দিন। চার থেকে পাঁচ লাখে পৌঁছতে লাগল মাত্র ৬ দিন। এভাবেই করোনা দাপট দেখাচ্ছে দেশটিতে। এমন অবস্থায় আগামী ১২ আগস্ট পর্যন্ত বাতিল করা হয়েছে সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল।

ভাতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ হাজার ৫৫২ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। একদিনে আক্রান্তের নিরিখে যা সর্বোচ্চ। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ৮ হাজার ৯৫৩ জনে দাঁড়িয়েছে। একইসময়ে আরও ৩৮৪ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। এ নিয়ে মোদির দেশে মৃতের সংখ্যা ১৫ হাজার ৬৮৫ জনে ঠেকেছে।

এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে সাত হাজার ১০৬ জনের। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজধানী দিল্লিতে মৃত্যু ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। করোনার প্রভাবে সেখানে মোট দু’হাজার ৪৯২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তৃতীয় স্থানে থাকা গুজরাটে মারা গেছেন এক হাজার ৭৭১ জন। চলতি মাসে তামিলনাড়ুতেও ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে প্রাণহানি। যার জেরে বেশ কয়েকটি রাজ্যকে টপকে তালিকার উপরের দিকে উঠে এসেছে দক্ষিণের এই রাজ্য। সেখানে এখনও অবধি ৯৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এরপরই তালিকায় রয়েছে উত্তরপ্রদেশ (৬৩০), পশ্চিমবঙ্গ (৬১৬) ও মধ্যপ্রদেশ (৫৪৬)। এছাড়া শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে রাজস্থান (৩৮০), তেলঙ্গানা (২৩৭), হরিয়ানা (২১১), কর্নাটক (১৮০), অন্ধ্রপ্রদেশ (১৪৮) ও পঞ্জাব (১২২)।

৩০ জানুয়ারি কেরলে দেশের প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি রুখে দিয়েছিল কেরল। কিন্তু মহারাষ্ট্রে তা বল্গাহীনভাবেই বেড়েছে। শুরু থেকেই এই রাজ্য কার্যত সংক্রমণের শীর্ষে ছিল। সময় যত গড়িয়েছে, এই রাজ্য নিয়ে গোটা ভারতের শঙ্কা বেড়েছে। দেড় লক্ষ সংক্রমণ ও সাত হাজারের উপর মৃত্যু নিয়ে দেশের শীর্ষে রয়েছে রাজ্যটি। গত ২৪ ঘণ্টায়ও পাঁচ হাজার ২৪ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে সেখানে। এ নিয়ে আক্রান্ত বেড়ে ১ লাখ ৫২ হাজারে দাঁড়িয়েছে।

দিল্লিতেও প্রতিদিন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। বেশ দ্রুতগতিতে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে সেখানে। এখনও অবধি ৭৭ হাজার ২৪০ জন করোনার শিকার হয়েছেন সেখানে। তৃতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে আক্রান্ত ৭৪ হাজার ৬২২ জন। চতুর্থ স্থানে থাকা গুজরাটে করোনার ভুক্তভোগী ৩০ হাজার ৯৫ জন।

উত্তরপ্রদেশও আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়েছে। করোনা সংক্রমণের হিসাবে এরপরই রয়েছে রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্নাটক। এই সব রাজ্যগুলি ১০ হাজারের গণ্ডি পার করে এগিয়ে চলেছে। রাজস্থান (১৬ হাজার ৬৬০), পশ্চিমবঙ্গ (১৬ হাজার ১৯০), হরিয়ানা (১২ হাজার ৮৮৪), মধ্যপ্রদেশ (১২ হাজার ৭৯৮), তেলঙ্গানা (১২ হাজার ৩৪৯), অন্ধ্রপ্রদেশ (১১ হাজার ৪৮৯) ও কর্নাটকে (১১ হাজার ৫) জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

লকডাউন শিথীল হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গেও বাড়ছে সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৪২ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন এ রাজ্যে। এ নিয়ে সংক্রমিতের সংখ্যা ১৬ হাজার ১৯০ জন দাঁড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৬১৬ জনের।

সংক্রমণ ঠেকাতে প্রথমদিকে সামাজিক দূরত্বের উপর জোর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন লকডাউনের কড়াকড়ি নেই। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হওয়ায় বাজার-হাট, গণপরিবহনে বেড়েছে লোকের ভিড়। বেড়েছে একে অপরের সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনাও। তাই, প্রতিদিনই আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। এই হারে যদি বাড়তে থাকে তাহলে ছয় লাখে পৌঁছতে আরও কম সময় লাগবে।

তবে, আশার কথা হলো ভারতে আক্রান্তের অর্ধেকেরও বেশি সুস্থ হয়ে উঠেছেন ইতিমধ্যে। যা ইতিমধ্যেই তিন লাখ ছুঁই ছুঁই। গত ২৪ ঘণ্টায়ও ১০ হাজার ২৪৪ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন ২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৮১ জন ভুক্তভোগী।

করোনা এমন পরিস্থিতিতে আগামী ১২ অগাস্ট পর্যন্ত সবধরনের যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বাতিল করার কথা ঘোষণা করেছে ভারতীয় রেল মন্ত্রণালয়। এক নির্দেশনায় বলা হয়, ‘১২ অগাস্ট পর্যন্ত দেশে সমস্তরকম প্যাসেঞ্জার, মেল, এক্সপ্রেস ও শহরতলির ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।’

ভারতের গণমাধ্যমগুলোর তথ্য বলছে, লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিল করার পরেই দেশে করোনা সংক্রমণ আরও দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে, যা এখনও অব্যহত রয়েছে।

রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী ১ জুলাই থেকে ১২ অগাস্ট পর্যন্ত যেসমস্ত ট্রেনের টিকিট ইতিমধ্যেই বুক হয়ে গিয়েছিল, সেই টিকিটের টাকা যাত্রীদের ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে।

শেয়ার করুণ

Comments are closed.