বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ
হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে জামিন
দিয়েছের হাইকোর্ট। একইসঙ্গে একটি শর্ত জুড়ে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই শর্তানুযায়ী তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। তার জামিন প্রশ্নে রুলের
ওপর হাইকোর্টে বুধবার শুনানি শেষ করেছিলেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে
ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারোয়ার হোসাইন বাপ্পী। এ সময় আদালত কক্ষে
থাকা জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসরুল হক চৌধুরী জামিন আবেদনের পক্ষে
যুক্তি দিয়ে শুনানি করেন।
মিন্নির জামিন প্রশ্নে এ আদালত গত ২০ আগস্ট এক সপ্তাহের রুল জারি করে আদেশ দিয়েছিল। ওইদিন একইসঙ্গে গতকাল ২৮ আগস্ট
মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে সিডি (কেস ডকেট)
নিয়ে হাইকোর্টে হাজির হতে বলেন। সেই অনুসারে তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির
কেস ডকেট নিয়ে
আদালতে হাজির হন।
৩০ জুলাই মিন্নি তার জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেন। এর আগে গত ১৬ জুলাই
দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টার দিকে
মিন্নিকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পরে ১৭ জুলাই মিন্নিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজুল ইসলাম
গাজীর আদালতে হাজির
করে ৭ দিনের
রিমান্ড চায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেয়। পরে এ মামলায় মিন্নি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এখন তিনি বরগুনা কারাগারে রয়েছেন। তার জামিন
চেয়ে আনা আবেদন
নাকচ করে দেয় জেলার জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্র্যাট আদালত। পরে জেলা ও দায়রা
জজ আদালতও মিন্নির জামিন আবেদন নাকচ
করে আদেশ দেয়।
গত ২৬ জুন সকাল
সাড়ে দশটার দিকে
বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের পাশে
রিফাতকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীর সামনে
এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে কয়েকজন যুবক।
সেসময় নানাভাবে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত বাঁচতে পারেনি রিফাত। ওই ঘটনার
একটি ভিডিও পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে তা ব্যাপক ভাবে ভাইরাল হয়।
সেখানে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক রিফাতকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একের
পর আঘাত করছে। নৃশংস
এ ঘটনায় নিহত
রিফাতের বাবা দুলাল
শরীফ বাদী হয়ে বরগুনা সদর থানায়
একটি হত্যা মামলা
করেন। তাতে বরগুনা শহরে চিহ্নিত সন্ত্রাসী সাব্বির আহম্মেদ ওরফে
নয়ন বন্ড এবং
তার সহযোগী রিফাত ফরাজী
ও তার ছোট ভাই রিশান ফরাজীসহ ১২ জনকে আসামি
এবং আরও চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাত আসামি
করা হয়। হত্যাকান্ডে প্রধান আসামী নয়ন বন্ড
পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত
হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন বেশ ক’জন আসামি।