টপ পোষ্ট

৩০ থেকে ৪০ হাজার জঙ্গি রয়েছে পাকিস্তানে

0

পাকিস্তানে এখনও
৩০-৪০ হাজার জঙ্গি রয়েছে যারা আফগানিস্তান ও কাশ্মীরের কিছু অংশে প্রশিক্ষণ নিয়েছে।
মার্কিন সফরে গিয়ে মঙ্গলবার এমনই বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি করলেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী
ইমরান খান। সেইসঙ্গে দেশটির এহেন পরিস্থিতির জন্য আগের সরকারগুলোকেই দায়ী করেন তিনি।

ইমরান খান বলেন,
‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কোনও রকম আগ্রহই দেখায়নি আগের সরকার। এ ব্যাপারে
তাদের কোনও রাজনৈতিক সদিচ্ছাও ছিল না।’ পাশাপাশি আগের সরকার যে কাজ করেছে, তার
পুনরাবৃত্তি হতে দেবে না তাঁর সরকার এবং সন্ত্রাস দমনে তাঁর সরকার অনেক বেশি উদ্যোগী
বলেও দাবি করেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে ‘১৫ বছর
ধরে পাকিস্তানে ৪০টি জঙ্গি সংগঠন সক্রিয় ছিল’ বলে উল্লেখ করেছিলেন ইমরান খান। কিন্তু
সে তথ্য বারবারই আমেরিকার কাছে গোপন করেছে পূর্ববর্তী সরকারগুলো। এরপরই অবশ্য সাফাই
গাইলেন তিনি, পাকিস্তানেরও সে সেময় কিছু করার ছিল না। কেননা গোটা পরিস্থিতি পাক সরকারের
নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল।

ইমরান আরও বলেন,
‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমেরিকা যে যুদ্ধের ডাক দিয়েছিল তাতে অংশ নিয়েছিল পাকিস্তান।
তবে ৯/১১-র ঘটনায় পাকিস্তানের কোনওরকম সংশ্লিষ্টতা ছিল না।’ এর পরই তাঁর মন্তব্য,
সে সময় পাকিস্তানই দেশের ভিতরের সন্ত্রাসবাদ থেকে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই চালাচ্ছিল।
কিন্তু তার পরেও আমেরিকার সঙ্গে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়েছে তারা।

এমনকি পূর্বসূরিরা
যে ভুল করেছেন, তেমন ভুলের পুনরাবৃত্তি আর হতে দিতে চান না বলেও ইঙ্গিত দেন ইমরান।
তাঁর দাবি, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদ দমনে জোর পদক্ষেপে চেষ্টা চালাচ্ছে। তালেবানদের আলোচনার
টেবিলে নিয়ে আসার কাজ শুরু করেছে তারা। ভাল সাড়াও মিলেছে। তবে বিষয়টা খুব সহজেই মিটবে
বলে মনে করছেন না ইমরান। শান্তি ফিরিয়ে আনতে যা যা করা প্রয়োজন তাই করবেন। শুধু তাই
নয়, এ বিষয়ে ঠিক কীভাবে তাঁরা এগোচ্ছেন, তার গোটা প্রক্রিয়াটাই আমেরিকাকে জানাবে পাকিস্তান,
এমনটাই দাবি ইমরানের।   

তিনি আরও বলেন,
‘গোটা দেশ আমার সঙ্গে আছে। পাক সেনারাও সঙ্গে আছে। আমাদের সবারই মূল লক্ষ্য একটাই,
যত দ্রুত সম্ভব শান্তি ফিরিয়ে আনা।’

সম্প্রতি আমেরিকার
সঙ্গে পাকিস্তানের যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, সেই দূরত্ব মিটিয়ে ফেলতে মরিয়া ইমরান। এ প্রসঙ্গে
তিনি বলেন, ‘খুব খারাপ লাগে এটা ভাবতে যে, আমাদের দুই দেশের মধ্যে একটা অবিশ্বাসের
বাতাবরণ তৈরি হয়েছে।’
কিন্তু এখন থেকে সেটা আর হতে দেবেন না ইমরান। সেইসঙ্গে এটাও বলেন, ‘আশা করি এখন থেকে
দু’দেশের
মধ্যে যে সম্পর্ক গড়ে উঠবে, তা হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন মাত্রার।’

এদিকে হঠাত্ করে
ইমরানের এমন ভোলবদল কেন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সন্ত্রাসবাদ দমনের প্রশ্নে দেয়ালে পিঠ ঠেকে
গেছে পাকিস্তানের। একদিকে, সন্ত্রাসবাদে অর্থ জোগান বন্ধ করতে এফএটিএফ-এর হুঁশিয়ারি,
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মহল থেকে এ ব্যাপারে ক্রমাগত চাপে বেসামাল হয়ে পড়েছে পাকিস্তান।
 

শুধু তা-ই নয়,
সন্ত্রাস দমনে এখনই ব্যবস্থা না নিলে আন্তর্জাতিক মহল থেকে আর্থিক সহযোগিতাও বন্ধ হয়ে
যেতে পারে। আমেরিকার সঙ্গেও সম্পর্ক ক্রমশ তিক্ততার পর্যায়ে পৌঁছেছে। এমন পরিস্থিতিতে
দাঁড়িয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারের ভাবমূর্তি
উজ্জ্বল করতে পাকিস্তানের এই অবস্থার জন্য পূর্বসূরিদের দিকে ইমরান দায় ঠেলে দিয়েছেন
বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

সূত্র: আনন্দবাজার।

শেয়ার করুণ

আপনার মন্তব্য দিন