চলে গেলেন ভারতীয় নারী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা কবি কমলা ভাসিন (৭৫)। শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে দিল্লির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বেশ কিছুদিন ধরেই অসুখে ভুগছিলেন কমলা। তাঁর ফুসফুসে পানি জমে ছিল। শুক্রবার অবস্থা খারাপ হলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শনিবার ভোর ৩টা নাগাদ চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন কমলা ভাসিনের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার দিনের শুরুতেই কমলা ভাসিনের মৃত্যু সংবাদ নেটিজেনদের সামনে আনেন সমাজকর্মী কবিতা শ্রীবাস্তব। এক ট্যুইট বার্তায় তিনি লেখেন, “আমাদের প্রিয় বন্ধু কমলা ভাসিন ২৫ সেপ্টেম্বর ভোর ৩টার সময় আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। ভারতীয় নারী আন্দোলনের ক্ষেত্রে, তথা গোটা দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষেত্রেই এটা একটা বিরাট ধাক্কা। যতই প্রতিকূলতা আসুক তার বিরুদ্ধে কমলা লড়ে গিয়েছেন। আমাদের হৃদয়ে কমলা থাকবেন।”
কমলা ভাসিন সত্তরের দশক থেকেই নারী আন্দোলন নিয়ে সোচ্চার। ২০০২ সালে তিনি সঙ্গত নামক একটি ফেমিনিস্ট নেটওয়ার্ক তৈরি করেন। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কমলা প্রান্তিক আদিবাসী নারীদের প্রশিক্ষিত করার কাজ করতেন। এর পাশাপাশি লিঙ্গ তত্ত্ব, সমতা, মানবাধিকার, পুরুষতন্ত্র নিয়ে লেখা কমলার বইগুলো অন্তত ৩০টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
গ্রামাঞ্চলে বেড়ে ওঠা কমলা খুব সহজেই প্রান্তিক নারীদের সমস্যার কথা বুঝতেন। রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর করে কমলা চলে গিয়েছিলেন পশ্চিম জার্মানির মুনস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে। জার্মানির ফাউন্ডেশন ফর ডেভলপমেন্ট ওরিয়েন্টেশন কেন্দ্রে বেশ কিছুদিন কাজ করে কমলা দেশে ফিরে আসেন।
বাকি জীবনটা তিনি কাটান দেশের প্রান্তিক নারীদের হিতার্থে, নারীদের সমানাধিকারের কথা বলে। বিজ্ঞাপনী পণ্যতে নারীদের যেভাবে উপস্থাপন করা হয়, তাকে তিনি অন্যায় হিসেবেই আখ্যা দেন এবং সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সর্বদা মুখ খুলেছেন কমলা।
এক কথায়, ভারতীয় নারী আন্দোলনের প্রাণভোমরা ছিলেন কমলা ভাসিন। তাঁর মৃত্যু ভারতীয় নারী আন্দোলনের অপূরণীয় ক্ষতি বলেই মনে করছেন তাঁর সহকর্মী, সতীর্থ ও সমাজকর্মীরা। সূত্র- জি নিউজ।