টপ পোষ্ট

টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে নিলেন এমিলিয়ানো

0

টাইব্রেকার এড়াতে চেয়েছিলেন আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি। তবে সেমি-ফাইনালে সেই ভাগ্য পরীক্ষাতেই নামতে হয়েছিল তার দলকে। সেখানে ব্যবধান গড়ে দিলেন এমিলিয়ানো মার্তিনেস। কলম্বিয়ার তিনটি শট ঠেকিয়ে দলকে কোপা আমেরিকার ফাইনালে তোলার নায়ক এই গোলরক্ষক।

ব্রাসিলিয়ার মানে গারিঞ্চা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ ১-১ ড্র থাকে। টাইব্রেকারে ৩-২ ব্যবধানে জেতে লিওনেল স্কালোনির দল।

আগামী রোববার রিও দে জেনেইরোর মারাকানা স্টেডিয়ামে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ব্রাজিলের মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা।

কোয়ার্টার-ফাইনালে টাইব্রেকারে উরুগুয়েকে হারিয়ে আসা কলম্বিয়া এবার পারেনি। হুয়ান কুয়াদরাদোর প্রথম শটে হয় গোল। দাভিনসন সানচেস ও ইয়েরি মিনার পরের দুটি শট বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন মার্তিনেস।

মিগুয়েল বোরহার বুলেট গতির শট খুঁজে নেয় জাল। এদউইন কারদোনার শট আবার বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন মার্তিনেস। এক আসর পর ফাইনালে যাওয়ার উচ্ছ্বাসে মাতে আর্জেন্টিনা।
দলের হয়ে প্রথম শটে গোল করেন লিওনেল মেসি। রদ্রিগো দে পল পরের শট মারেন আকাশে। পরের দুটি শট ঠিকানাতেই পাঠান লেয়ান্দ্রো পারেদেস ও লাউতারো মার্তিনেস। আর্জেন্টিনার পঞ্চম শটের প্রয়োজন হয়নি।

আক্রমণাত্মক শুরু করা আর্জেন্টিনা এগিয়ে যেতে পারত চতুর্থ মিনিটে। বল পায়ে তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে কলম্বিয়ার ডি বক্সে ঢুকে পড়েন মেসি। খুঁজে নেন পেনাল্টি স্পটের কাছে থাকা নিকোলাস গনসালেসকে। তার হেড একটুর জন্য থাকেনি লক্ষ্যে।

গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি আর্জেন্টিনার। জিওভানি লো সোলসোর কাছ থেকে ডি বক্সে বল পান মেসি। কলম্বিয়ান এক ডিফেন্ডার বলে পা ছোঁয়ালেও দ্রুতই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আর্জেন্টিনা অধিনায়ক খুঁজে নেন লাউতারো মার্তিনেসকে। ইন্টার মিলান স্ট্রাইকার আড়াআড়ি শট বল পাঠান জালে। সপ্তম মিনিটে এগিয়ে যায় দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

চলতি আসরে এটি মেসির পঞ্চম অ্যাসিস্ট, কোপা আমেরিকার ইতিহাসেই যা সর্বোচ্চ।

পরের মিনিটেই সমতা প্রায় ফিরিয়ে ফেলছিল কলম্বিয়া। বাঁ দিক থেকে একটি ক্রস ডি বক্সে পেয়ে যান কুয়াদরাদো। তার শট ঠেকিয়ে জাল অক্ষত রাখেন আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক মার্তিনেস।
আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে জমে উঠে ম্যাচ। দুই প্রান্তেই রক্ষণের উপর দিয়ে বয়ে যায় ঝড়। ঝাপটা বেশি যায় এগিয়ে থাকা আর্জেন্টিনার উপর দিয়েই। ৩৮তম মিনিটে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে কলম্বিয়ার দুটি চেষ্টা ব্যর্থ হয় পোস্টে লেগে।

ডি বক্সের বাইরে থেকে উইলমার বারিওসের বুলেট গতির শট লো সোলসোর গায়ে লেগে দিক পাল্টে পোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়। ইউভেন্তুস উইঙ্গার কুয়াদরাদোর কর্নারে ইয়েরি মিনার ক্রস ব্যর্থ হয় ক্রসবারে লেগে।

৪৪তম মিনিটে আবার সুযোগ নষ্ট হয় আর্জেন্টিনার। মেসির কর্নারে লাফিয়ে গোলরক্ষক বরাবর হেড করেন গনসালেস। বল ধরতে গিয়ে তালগোল পাকান দাভিদ অসপিনা। তার ভাগ্য ভালো ক্রসবারের উপর দিয়ে বল যায় বাইরে।

বিরতিতে তিন পরিবর্তন এনে দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণাত্মক শুরু করে কলম্বিয়া। ৫১তম মিনিটে তাদের দুটি শট কোনোমতে ফিরিয়ে দেয় আর্জেন্টিনা।

৬১তম মিনিটে আর পারেনি তারা। অসাধারণ এক গোলে সমতা ফেরায় কলম্বিয়া। নিজেদের অর্ধ থেকে বাড়ানো ফ্রি কিকে আর্জেন্টিনার ডি বক্সে বল পেয়ে যান লুইস দিয়াস। দারুণ গতিতে ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে জাল খুঁজে নেন তিনি।

এরপর অনেকটা রক্ষণাত্মক হয়ে পড়ে কলম্বিয়া। আনহেল দি মারিয়া বদলি নামার পর আক্রমণে গতি বাড়ে আর্জেন্টিনার।
৭৩তম লাউতারো মার্তিনেসের অবিশ্বাস্য মিসে এগিয়ে যেতে পারেনি দলটি। গোল পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে দি মারিয়াকে বাধা দিতে চেয়েছিলেন ওসপিনা। বলের নাগাল পাননি কলম্বিয়া গোলরক্ষক। নিজে শট না নিয়ে দি মারিয়া খুঁজে নেন মার্তিনেসকে। গোললাইনে দাঁড়িয়ে থাকা বারিওস বরাবর শট নেন তরুণ ফরোয়ার্ড। ফিরতি বলে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি দি মারিয়াও।

৮১তম মিনিটে দি মারিয়ার পাস ডি বক্সে পেয়ে ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে শট নেন মেসি। কাছের পোস্টে লেগে ফিরে তার শট। একটুর জন্য ফিরতি বলের নাগাল পাননি লাউতারো মার্তিনেস।

বাকি সময়ে গোলের তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কোনো দলই। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে আর্জেন্টিনার নায়ক এমিলিয়ানো মার্তিনেস।

শেয়ার করুণ

Comments are closed.