টপ পোষ্ট

অটিস্টিক শিশু রায়ার ই্চ্ছা পূরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী

0

ভিডিও কল করে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন (অটিস্টিক) শিশু মামিজা রহমান রায়ার স্বপ্ন পূরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় তিনি রায়ার কবিতা আবৃত্তি ও গল্পও শুনেছেন।

বৃহস্পতিবার বিকালে রায়ার মা নাবিহা রহমান পিংকীর মোবাইলে ভিডিও কল করেন প্রধানমন্ত্রী।

রায়ার মা জানান, হঠাৎ প্রধানমন্ত্রীর কল পেয়ে তিনি হতবিহবল হয়ে পড়েন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক আচরণে তার মনে হয়নি তিনি সরকার প্রধানের সঙ্গে কথা বলছেন, বরং তার মনে হয়েছে তিনি তার মা কিংবা ফুপির সঙ্গে কথা বলছেন।

তিনি জানান, রায়া ভিডিও কলে প্রধানমন্ত্রীকে জাতীয় সংগীত গেয়ে শুনিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীও রায়ার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে একটি কবিতা আবৃত্তি করেও শুনিয়েছে রায়া। বেশ কিছু সময় ধরে রায়ার থেকে গল্পও শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী।

রায়ার মা আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, করোনা পরিস্থিতি ভালো হলে রায়া তার বাসায় গিয়ে দেখা করবে।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পর রায়া আরেক ভিডিওতে বলে, সে প্রধানমন্ত্রীকে ‘আই লাভ ইউ বলেছে’। করোনা পরিস্থিতি ভালো হলে প্রধানমন্ত্রী তাকে বলেছেন, তিনি রায়াকে ‘আই লাভ ইউ’ বলবেন। তাকে ভালোবাসা দেবেন। তাকে জড়িয়ে ধরে আদর করবেন।

এর আগে রায়ার স্কুল শিক্ষক হাসিনা হাফিজ একটি ভিডিও পোস্ট করেন অটিজম ম্যানেজমেন্ট সেন্টার নামে একটি ফেসবুক গ্রুপে।

সেখানে রায়া বলে, সে প্রধানমন্ত্রীকে খুব ভালোবাসে ও তার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলতে চায়। প্রধানমন্ত্রীর হাসি তার প্রিয়।

এই ভিডিও পোস্টের একদিনের মাথায় রায়াকে ভিডিও কল দেন প্রধানমন্ত্রী। সন্তানের ইচ্ছে পূরণে প্রধানমন্ত্রীর এমন ভূমিকায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন রায়ার মা নাবিহা রহমান পিংকী। বলেন, এটা তার মেয়ে রায়া ও তার জন্য অবিশ্বাস্য ছিল।

এর আগে মামিজা এবং তার শিক্ষক হাছিনা হাফিজের ভিডিওতে কথোপকথন এখানে তুলে ধরা হলো—

‘আমার নাম মামিজা রহমান রায়া বুড়ী লম্বু।
-আচ্ছা তোমার নাম লম্বু, তোমাকে কে লম্বু বলে ডাকে।
-আমার টিচারের নাম হাছিনা হাফিজ।
-তুমি আজকে কাকে ভিডিও করছো, কাকে ভিডিও করছো কার উদ্দেশ্যে ভিডিও করছো?
-শেখ হাসিনার জন্য প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনার জন্য।
-তুমি কি জানো শেখ হাসিনা আমাদের প্রাইম মিনিস্টার?
-হ্যাঁ প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা।
-তুমি কেন প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনার সাথে কথা বলতে চাও?
-ওর সাথে আমি কথা বলবো, গল্প করবো।
-কেন তুমি আমাদের প্রাইম মিনিস্টারের সাথে কথা বলতে চাও কি কথা বলতে চাও?
-(শেখ হাসিনার প্রতি সালাম দিয়ে বলেন) শেখ হাসিনার সাথে কথা বলবো অনেক। মিষ্টি শেখ হাসিনার সাথে কথা বলবো।
-তুমি কি শেখ হাসিনাকে পছন্দ করো?
-আই লাইক শেখ হাসিনা।
-কেন শেখ হাসিনাকে পছন্দ করো?
-ওকে আমার ভাল লাগে? শেখ হাসিনার জীবনে অনেক ভালবাসা আছে। এ্যা শেখ হাসিনা… আমি তোমাকে সাগরের মতো অনেক ভালবাসি, শেখ হাসিনা আমি অনেক সাগরের মতো ভালবাসি…।
-তুমি কি চাচ্ছো আমাদের প্রাইম মিনিস্টার একদিন তোমার সাথে কথা বলুক?
-(মাথা ঝাঁকিয়ে) ওকে।
-তাহলে তুমি আমাদের প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করো।
-হ্যাঁ অনুরোধ করবো জ্বি জ্বি…।
-তুমি অনুরোধ করো, তোমার অনুরোধ শুনে হয়তোবা তিনি কথা বলতেও পারেন।
-শেখ হাসিনা আপনি আমার সাথে কথা বলবেন শেখ হাসিনা সবার পরে আমার সাথে কথা বইলেন।

শিক্ষক তার ছাত্রীর পরিচয় তুলে ধরে বলেন, ও আমাদের স্টুডেন্ট, ওর নাম হচ্ছে মামিজা রহমান রায়া, ও হচ্ছে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই মনে করে যে শেখ হাসিনা ওর মোবাইলে ফোন করবে, প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা কল করবে, ওর সাথে একটু কথা বলবে। আমার যেটা কাজ সেটা হচ্ছে আমি প্রতিদিন ঘুম থেকে সকালে উঠে রায়ার জন্য আমাদের প্রাইম মিনিস্টারের একটা ছবি আপলোড করে ওকে আমি দেই। ও যদি ঘুম থেকে ওঠে দেখে যে ওকে আমি একটা প্রাইম মিনিস্টারের ছবি পাঠিয়েছি তাহলে সে খুশি। আর খুব ইচ্ছা আমাদের প্রাইম মিনিস্টার একটি ফোন করে বলবে, রায়া তুমি কেমন আছো, রায়া তোমাকে আমি দেখতে চাই, সে আমাদের প্রাইম মিনিস্টারকে অনেক পছন্দ করে। আমি আমাদের এই ভিডিওয়ের মাধ্যমে আজকে চাচ্ছি যে, আমাদের এই ভিডিওটা আমাদের প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা পর্যন্ত পৌঁছাবে এবং ওনি একদিন এতো ব্যস্ততার মাঝেও এই বিশেষ চাহিদা-সম্পন্ন শিশুদের জন্য তো অনেক কিছু করছেন, ওনি রায়ার খুশীর জন্য রায়ার সাথে একদিন কথা বলবেন।

শেয়ার করুণ

Comments are closed.