টপ পোষ্ট

কোভিড-১৯: বিশ্বে মৃত্যু ছাড়াল ৩৪০০০

0

বিশ্বজুড়ে থামছেই না করোনার দাপট। যেখানে প্রতিনিয়ত সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর দেয়া তথ্যানুযায়ী, ভাইরাসটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৮ হাজার ৩৪৮ জন। আর প্রাণহানি হয়েছে ৩ হাজার ৯৭ জনের।

এতে করে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৭ লাখ ২৩ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৩ হাজার ৯৭৬ জনে। একইসঙ্গে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ১ লাখ ৫১ হাজার ৭৬৬ জন। আক্রান্তে যুক্তরাষ্ট্র ও মৃতের সংখ্যায় ইতালি সবার শীর্ষে।

বিশ্বখ্যাত পরিসংখ্যান বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার পর গত তিন দিনেই সেখানে আরও ৪২ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটিতে বর্তমানে সংক্রমিতের সংখ্যা ১ লাখ ৪২ হাজার ৭০ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার কবলে পড়েছেন ১৮ হাজার ৩২০ জন।

অপরদিকে, কার্যকরী কোনো প্রতিষেধক না থাকায় বেড়েই চলেছে লাশের সারি। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২৫৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এতে করে ট্রাম্পের দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৪৮৪ জন। আগামী ৪ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ৮৫ হাজার মানুষ ভাইরাসটিতে প্রাণ হারাতে পারেন বলে মনে করছেন গবেষকরা।

উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২ ট্রিলিয়ন ডলারের করোনা ভাইরাস রিলিফ বিলে স্বাক্ষর করেছেন। করোনা ভাইরাসের কারণে আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতেই মূলত এ বিল পাশ করা হয়েছে।

করোনা প্রাদূর্ভাব ঠেকাতে নাগরিকদের আরও ৩০ দিন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গতকাল রোববার তিনি এ নির্দেশনা দেন।

এদিকে, একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড নিয়ে প্রাণহানির তালিকায় সবার শীর্ষে ইউরোপের দেশ ইতালি। সেখানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১০ হাজার ৭৭৯। এর মধ্যে গত একদিনে মারা গেছেন ৭৫৬ জন। আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৯৭ হাজার ৬৮৯ জন।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালির ন্যায় ভয়াবহ সময় পার করছে ইউরোপের আরেক দেশ স্পেন। দেশটিতে করোনায় মোট প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৮০৩ জনে, যেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৮২১ জনের। আক্রান্ত ৮০ হাজার ছাড়িয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার স্পেনে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তবুও লাশের লাইন ছোট হচ্ছে না। একই অবস্থা চলছে ফ্রান্সেও। গত একদিনে সেখানে করোনার কবলে পড়েছেন ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ। যেখানে প্রাণ গেছেন ২ হাজার ৬০৬ জনের।

ভয়াবহ অবস্থায় ইউরোপের আরেক কেন্দ্রবিন্দু যুক্তরাজ্যও। সেখানে জারি করা হয়েছে লকডাউন। তারপরও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও দ্বিতীয় এলিজাবেথও করোনার প্রকোপ থেকে মুক্তি পাননি।

এতে করে থমকে গেছে গোটা ব্রিটেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে দুই শতকেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এ নিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ২২৮ জনে দাঁড়িয়েছে। যেখানে ৮ বাংলাদেশিও রয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ১৯ হাজার পেরিয়েছে।

ব্যাপকভাবে বিস্তার ছড়ানো দেশগুলোর তালিকায় রয়েছে জার্মানির নামও। দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৬২ হাজার। তবে আক্রান্ত অর্ধলক্ষের বেশি হলেও মৃত্যু হয়েছে ৫৪১ জনের—যা ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম।

এদিকে ইরানে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৩ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় মৃত্যুর তালিকায় নাম উঠেছে ২ হাজার ৬০৬ জনের। আক্রান্ত ৩৮ হাজার ৩০৯ জন।

এছাড়া ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোতেও শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নেদারল্যান্ডসে ৭৭১, বেলজিয়ামে ৪৩১, সুইজারল্যান্ডে ৩০০, সুইডেনে ১১০, পর্তুগালে ১১৯, অস্ট্রিয়ায় ৮৬, ডেনমার্কে ৭২ এবং আয়ারল্যান্ডে ৪৬, রোমানিয়ায় ৪৩ এবং গ্রিসে ৩৯ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনা।

কানাডায় মৃত্যু হয়েছে ৬৫ জনের এবং ব্রাজিলে সেই সংখ্যাটা ১৩৬। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রকোপ শুরু হলেও দেশটি তা নিয়ন্ত্রণ করেছে ভালোভাবেই। তবে সেখানেও ১৫৮ জন করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া ইন্দোনেশিয়ায় ১১৪ এবং জাপানে ৫৪ জন করোনায় মারা গেছেন।

ভারতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা গিয়ে ঠেকেছে ২৭ জনে। দেশটি এখন ২১ দিনের লকডাউনে আছে। এছাড়া পাকিস্তানে আক্রান্তের দেড় হাজার পেরিয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ১৪ জন মারা গেছেন। ফিলিপাইনে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৭১ জন; আক্রান্ত দেড় হাজার ছুঁই ছুঁই।

বাংলাদেশে এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত সংখ্যা ৪৮ জন, যার মধ্যে মারা গেছেন ৫ জন। সংক্রমণ রোধে সারাদেশে সকল ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে চীন থেকে আনা হয়েছে কিট।

শেয়ার করুণ

Comments are closed.