টপ পোষ্ট

চোরাচালান ছেড়ে তারা নেমেছে সবজি চাষে

0

আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্যের আশায় জীবনকে বিপদগ্রস্থ করে তরুণ ও যুবকরা সীমান্তরক্ষিদের চোখ গলে চোরাচালানের কাজ করতেন। ওপার থেকে এপারে অবৈধ পথে আনতেন গরু। রাতের আঁধারে দুই দেশে সীমান্ত রক্ষিদের বন্দুকের নলের সামনে থেকে এ কাজ করতেন তারা। এত ঝুঁকি নেওয়ার পরও প্রতিবারে তারা পেতেন দুই থেকে চার হাজার টাকা।

তবে তারা দিন পরিবর্তনের হাওয়ায় অবৈধ পথে গরু আনা বাদ দিয়েছেন। নেমেছে মাঠের কাজে। যশোরের শার্শা উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা গোগা ইউনিয়নের রুদ্রপুর গ্রামে চোরাচালান কারবার ছেড়ে সবজি চাষে ঝুঁকেছেন অনেকে। গ্রামটি সীমান্তবর্তী হওয়ায় চোরাচালানের সাথে জড়িয়ে পড়ে গ্রামের অধিকাংশ লোকজন। তারা ভারতীয় গরু আনার কাজসহ বিভিন্ন ধরনের চোরাচালান কাজের সাথে জড়িত ছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) এবং বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড’র (বিজিবি) সদস্যদের কড়া নজরদারিতে তারা চোরাচালানের পথ বাদ দিয়েছেন। সবজি চাষ করে এখন তারা স্বাবলম্বী এবং সুস্থ জীবন যাপন করছেন। বদলে নিয়েছেন তাদের জীবনের পাশাপাশি পরিবারের জীবন। সীমান্তের দু‘শ গজের মধ্যে পাটসহ কোনো উঁচু গাছ বা ফসল লাগানো নিষেধ রয়েছে বিজিবির পক্ষ থেকে। তাই গ্রামের লোক সীমান্তের ধার ঘেঁষে এখন পটল, উচ্ছে, বেগুন, কাঁচা মরিচসহ নানান ধরনের সবজির চাষ করছেন। তবে পটল চাষে মানুষের আগ্রহ বেশি।

পটল চাষি রেজাউল জানান, তিনি ১২ কাঠা জমিতে পটল, নালার ধার ঘেঁষে পেঁয়াজ ও রসুন চাষ করেছেন। আর জমির আইলের ধারে বাঁধাকপি লাগিয়েছেন। এবছর প্রথম তিনি ৯০ টাকা কেজি দরে পটল বিক্রি করেছেন। পটল চাষে তার খরচ খুব একটা বেশি হয়নি। গত বছর এই জমিতে তিনি প্রায় এক লাখ টাকার পটল বিক্রি করেছিলেন।

রুদ্রপুর বিজিবি ক্যাম্পের পূর্বপাশ থেকে খালমুখ পর্যন্ত সীমান্ত সংলগ্ন সারা মাঠেই পটলের চাষ। ক্যাম্পের পশ্চিম পাশের সীমান্ত সংলগ্ন সব জমিতে একই কায়দায় পটলের চাষ চলছে। ফলে চোরাচালান ও গরু টানা কাজে আর কেউ যেতে চাইছেন না। তাদের জীবন কাটছে এখন সুন্দরভাবে।

স্থানীয় সাংবাদিক আজিজুল ইসলাম জানান, মূলত দারিদ্র ও বেকারত্বের কারণে সীমান্ত এলাকার যুবকেরা গরু চোরাচালানের দিকে ঝুঁকে পড়ছিল। আর এ উপার্জনের দিকে তাকাতে গিয়ে প্রাণকে ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিতেও পিছপা হয়নি গরু পাচারকারীদল। এখন নিজের জমির পাশাপাশি অন্যের জমিতে পরিশ্রম করে চোরাচালানী থেকে বেশি টাকা আয় করছে।

এ বিষয়ে গোগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ জানান, সীমান্তে চোরাচালান ও গরু পাচার বন্ধে বিজিবি‘র পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সীমান্তের মানুষকে সভার মাধ্যমে জনসচেনতনা করা হচ্ছে। এখন আর কেউ গরু আনতে ভারত সীমান্তে যাচ্ছে না। ফলে সীমান্তে গোলাগুলিও নেই। যারা চোরাচালানীর সাথে জড়িত তাদের অধিকাংশ এখন মাঠে কাজ করছে। সবজিসহ বিভিন্ন চাষাবাদে মনোযোগী হয়েছে। তবে এদের চাষাবাদে সরকারের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।

শেয়ার করুণ

Comments are closed.