টপ পোষ্ট

দুই যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন

0

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় দুই যুবককে ছাগল চোর আখ্যা দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

গত ১ জানুয়ারি উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য ও কুতুবপুর ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিন হাওলাদারের নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত যুবকদের পুলিশে দেয় আলাউদ্দিন হাওলাদার। একইদিন উল্টো সাজানো ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ যুবকদের ছাগল চুরির মামলায় আদালতে প্রেরণ করেন।

ওই সময় ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করেছিলেন, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর শাহী মহল্লা এলাকার শফিকুল ইসলামের দুটি বিদেশি জাতের ছাগল চুরি হয়। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুই চোরকে ধরে তাদের স্বীকারোক্তিতে মুন্সিগঞ্জ থেকে ছাগল দুটি উদ্ধার করা হয়।

নির্যাতনে শিকার আহত নাঈম কুতুবপুর ইউনিয়নের মুসলিমপাড়া এলাকার আব্দুর রব মাস্টারের ছেলে, অপরজন রাতুল একই এলাকার।

এ ঘটনায় আলাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘শরীফ মিয়ার ছাগল চুরি হয়েছে বলে আমার কাছে নালিশ করেছে। আমি সন্দেহ করে নাঈম ও রাতুলের অভিভাবকদের ডাকি। তখন তারা নাঈম ও রাতুলকে আমার কার্যালয়ে নিয়ে আসে। এ সময় স্থানীয় ছেলেরা নাঈম ও রাতুলকে মারধর করলে তারা ছাগল চুরির ঘটনার কথা স্বীকার করে এবং সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকায় ছাগল দুটি আছে বলে জানায়। এতে আমি থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে নাঈম ও রাতুলকে নিয়ে ওই এলাকায় গিয়ে ছাগল দুটি উদ্ধার করে।’

তিনি আরো জানান, ‘নাঈম ও রাতুলকে মারধরের সময় ছাগলের মালিক শরীফ মিয়া একাই তার মোবাইল দিয়ে ভিডিও করেছিলেন। তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম ফেসবুকে মারধরের ভিডিও কিভাবে গিয়েছে। সে জানিয়েছে স্থানীয় ছেলেরা তার কাছ থেকে ভিডিওটি নিয়েছে।’

এদিকে ভিডিওতে দেখা গেছে, দুই যুবককে পেটানো হচ্ছে আর সেই পেটানোর নির্দেশ দিচ্ছেন আলাউদ্দিন হাওলাদার, যা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। যেখানে থানা পুলিশ আছে, আদালত আছে, সেখানে এমনভাবে পেটানো যে আইনে অপরাধ সেটি জানেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে আলাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘হ্যা এটা আমাদের অন্যায় হয়েছে।’

নাঈমের মা নাজমা বেগম বলেন, ‘আমার পোলায় প্রিন্টিং কারখানায় কাম করে। ৩১ ডিসেম্বর রাতুলের লগে আমার পোলারেও ধইরা লইয়া যায়। মারতে মারতে লইয়া গেছে। পরে আবার আলাউদ্দিন হাওলাদার তার অফিসে নিয়া ইচ্ছামত মারছে। কুত্তারেও মাইনষে অমনে মারে না। আমার পোলায় অন্যায় করলে আমগো জানাইতো, পুলিশরে দিতো, হেয় অমন কইরা মারলো ক্যান। আমি এর বিচার চাই।’

এ বিষয়ে জানতে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

শেয়ার করুণ

Comments are closed.