টপ পোষ্ট

ব্রেক্সিটকে সামনে রেখে ‘অদেখা’ নির্বাচনে ব্রিটেন

0

আগামী ১২ ডিসেম্বর ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচন। দেশজুড়েই এখন নির্বাচনী হাওয়া, ব্রিটেন জুড়ে চলছে প্রচারাভিযান, আর নির্বাচন নিয়ে আলোচনা-বিতর্কে সরগরম সংবাদ মাধ্যম আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।

যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে এমন একটি নির্বাচন হয়তো আর কখনোই হয়নি- যেখানে পুরো দেশটা মনে হচ্ছে যেন দুভাগে ভাগ হয়ে গেছে। এর কারণ একটাই আর তা হলো ব্রেক্সিট। অর্থাৎ ব্রিটেনের ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ত্যাগ। এই নির্বাচনকেই বলা হচ্ছে, ‘দ্য ব্রেক্সিট ইলেকশন’।

ব্রেক্সিট ইস্যুকেই ঘিরে তাই নেতাদের যত প্রতিশ্রুতি-অঙ্গীকার। নির্বাচনের মাত্র পাঁচদিন আগে শনিবার দুই প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীর সর্বশেষ টিভি বিতর্কেও উঠে এলো সেই ব্রেক্সিট। একই ইস্যুতেই তীব্র বাকযুদ্ধে জড়ালেন ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা বরিস জনসন ও প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন।

ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এখন হয়ে উঠেছেন ব্রেক্সিটপন্থিদের সবচেয়ে বড় নেতা। তিনি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে ব্রেক্সিট কীভাবে হবে তা নিয়ে একটি চুক্তি করে এসেছেন, কিন্তু পার্লামেন্টে তা পাস করাতে পারছেন না, কারণ কনজারভেটিভদের কমন্স সভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই।

ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফের ব্রেক্সিট বিষয়ক সম্পাদক দিয়া চক্রবর্তী এ বিষয়ে বলেন, যদি এ নির্বাচনে বরিস জনসন একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পান, তাহলে ব্রেক্সিটের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে।

কারণ বিরোধী লেবার পার্টি বলছে, তারা ক্ষমতায় গেলে ইইউর সঙ্গে নতুন একটি চুক্তি করবে এবং একটি নতুন গণভোট করবে যাতে ভোটাররা চাইলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে থেকে যাবার পক্ষেও ভোট দিতে পারবেন।

আর অপর বিরোধী দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা বলছে, তারা ইইউতে থাকতে চান এবং ক্ষমতায় গেলে সাথে সাথেই ব্রেক্সিট বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করবেন।

বিতর্কে করবিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে ব্রেক্সিট সংকটের অবসান ঘটাবেন তিনি। দরকার হলে বরিসের ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ইইউ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। এমনকি প্রয়োজনে আরেকবার গণভোট আয়োজন করবেন তিনি।

বিপরীতে বরিস বলেন, তার হাতে ইতিমধ্যে ‘চমৎকার একটি চুক্তি’ রয়েছে। নির্বাচনে জয়ী হলেই আগামী ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের আগেই চুক্তি নিয়ে পার্লামেন্টে হাজির হবেন তিনি।

গত প্রায় চার বছর ধরে ব্রেক্সিট নিয়ে মহাসংকটে ব্রিটেন। বহু চেষ্টার পরও দীর্ঘ সময়ক্ষেপণ করে ব্রেক্সিট চুক্তি হলেও চুক্তির খসড়া হাউস অব কমন্সে পাস করাতে ব্যর্থ হয়েছেন ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের দুই প্রধানমন্ত্রী।

ফলে পার্লামেন্টের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আগেই আড়াই বছরের মাথায় পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আগামী ১২ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচন। হাউস অব কমন্সের ৬৫০টি আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠের জন্য ৩২৬ আসন প্রয়োজন। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি, বিরোধী লেবার পার্টি, লিবারেল ডেমোক্র্যাটস, স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি, ইন্ডিপেনডেন্ট গ্রুপ ফর চেঞ্জ, গ্রিন পার্টি, ব্রেক্সিট পার্টি ইত্যাদি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।

টাকে আসলেই বলা যায় ব্রেক্সিট নির্বচন, কারণ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ত্যাগের পক্ষে এবং বিপক্ষের দুই শিবিরের কে কেমন ভোট পায়, কোন পক্ষ ঐক্যবদ্ধ এবং কোন পক্ষ বিভক্ত এবং তার ওপরই সব নির্ভর করছে। কোন পক্ষ বেশি ঐক্যবদ্ধ, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ এমনই ব্যাখ্যা করেছেন বিবিসির রাজনৈতিক সংবাদদাতা রব ওয়াটসন।

শেয়ার করুণ

আপনার মন্তব্য দিন