টপ পোষ্ট

গর্ভপাত নিয়ে ফের উত্তপ্ত হচ্ছে আর্জেন্টিনা

0

অনেক দিন ধরে গর্ভপাতের বিষয়টি নিয়ে আর্জেন্টিনার জনগণ দু’ভাগে বিভক্ত। গতবছরও গর্ভপাতকে অপরাধের তালিকা থেকে সরাতে উদ্যোগী হয়েছিল দেশের একাংশ। তবে এর বিরুদ্ধে নেমে গর্ভপাতের বৈধতা ঠেকিয়ে দিয়েছিল অন্য অংশ।

কিন্তু গর্ভপাতের বিষয়টি আবার সামনে এসে যায় যখন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আলবের্তো ফার্নান্দেজ বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পরই তাঁর প্রথম কাজ হবে, গর্ভপাতকে দেশে বৈধ ঘোষণা করা।

যদিও পোপ ফ্রান্সিসের দেশে গর্ভপাত শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এর ফলে চার বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। একমাত্র ধর্ষণ ও সন্তানসম্ভবা মায়ের জীবনসঙ্কট প্রমাণ করতে পারলে গর্ভপাতের ছাড় মেলে। আগামী ১০ ডিসেম্বর নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টর শপথ গ্রহণের দিন। এর পর রাষ্ট্রের যাবতীয় ক্ষমতা আলবের্তো ফার্নান্দেজের হাতে চলে যাবে।

বরাবরই গর্ভপাতকে বৈধ করার পক্ষে ৬০ বছর বয়সি আলবের্তো ফার্নান্দেজ। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘গর্ভপাত থেকে অপরাধের বিষয়টি সরাতে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি আমি। দায়িত্ব পেলেই কংগ্রেসের কাছে বিল পেশ করব।’ তবে ‘গর্ভপাতকে আর অপরাধ বলা হবে না’, নাকি ‘গর্ভপাতকে বৈধ ঘোষণা করা হবে’— তা পরিষ্কার করেননি তিনি।

সম্প্রতি একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে তিনি এ কথা বলেছেন। ‘উই আর বেলেন’ নামের ওই বইটি একটি মেয়ের জীবন নিয়ে লেখা। যাকে আর্জেন্টিনার গর্ভপাত-বিরোধী আইনে জেল খাটতে হয়েছিল।

শারীরিক অসুস্থার জেরে সন্তানসম্ভবা তরুণীর আচমকাই গর্ভপাত হয়ে যায়। এর পরে গর্ভপাত-বিরোধী আইনে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ২৯ মাস জেল খাটতে হয়েছিল এই তরুণীকে।

প্রেসিডেন্টের বক্তব্যকে ঘিরে আর্জেন্টিনার জনগণ দ্বিধা বিভক্ত। একপক্ষ প্রেসিডেন্ট ফার্নান্দেজের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে, আবার অন্যপক্ষ এর বিরোধিতা করেছে। এই অংশ গর্ভপাতের বৈধতার বিষয়টি যে কোন মূল্যে প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে।

নতুন প্রেসিডেন্ট আলবের্তো ফার্নান্দেজের বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে গির্জা। আর্চবিশপ ভিক্টর ম্যানুয়েল প্রেসিডেন্টকে খোলা চিঠি লিখেছেন। এই চিঠিতে তিনি লিখেন ‘আলবের্তোর সঙ্গে যদি কথা বলতে পারতাম, জিজ্ঞাসা করতাম, আর্জেন্টিনার মানুষের কাছে এত বিতর্কিত একটা বিষয় নিয়ে হুকুম জারির খুব প্রয়োজন আছে কি!’

গির্জার অন্য একটি সংগঠনের প্রধান রুবেন প্রোয়েত্তি বলেছেন, ‘ফার্নান্দেজের পরিকল্পনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’ গত বছর গর্ভপাতকে বৈধ করার দাবিতে নারীবাদী সংগঠন যখন মিছিল করে,

তখন এদের প্রতিহত করতে প্রোয়েত্তি লোক নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘বেশি ক্ষমতা দেখালে ভুগতে হবে ফার্নান্দেজকে।’

গতবছরও দু’পক্ষের উত্তেজনায় গর্ভপাতের বিষয়টি সিনেটে উঠে। সেবার সিনেটরদের ভোটাভুটিতে গর্ভপাত বৈধতার পক্ষের অংশটি হেরে যায়।

শেয়ার করুণ

আপনার মন্তব্য দিন