রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজানে হামলায় জড়িতদের শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।
তিনি বলেন, এ মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে। আগামী সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে এসব কথা জানান তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ২০১৬ সালে ১লা জুলাই রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজানে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায় একদল জঙ্গি। এ মর্মান্তিক ঘটনায় দায়ের করা মামলা তদন্ত করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ, অস্ত্র-বোমা সংগ্রহ ও সমন্বয়সহ বিভিন্ন পর্যায়ে জড়িত অপরাধীদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট।
তিনি বলেন, হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনা একটি মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড। বাংলাদেশকে অকার্যকর করা, বিদেশিদের মধ্যে ভয়, ত্রাস সৃষ্টি করা বিশেষ করে দেশের চলমান উন্নয়ন ব্যহত করা এবং বিদেশি ক্রেতা ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে সরকারকে পতন করে দেয়ার ষড়যন্ত্র ছিল।
তিনি আরো বলেন, দায়সাড়াভাবে যদি অভিযোগপত্র দেই, তখন আসামিপক্ষের উকিল বিভিন্নভাবে প্রশ্ন উত্থাপন করবে, তার জবাব ও প্রমাণ আমাকে দিতে হবে। মুখের কথা কেউ বিশ্বাস করবে না। তার বস্তুগত প্রমাণ অভিজ্ঞদের দিয়ে বলতে হবে। এই কারণেই আমরা মামলার তদন্তের কাজ অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে করেছি যা শেষ পর্যায়ে আছে।
এক প্রশ্নের জবাবে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার কথা এখনই বলতে চাই না। আমি একজন প্রজাতন্ত্রের কমচারী। যখন বিচারিক আদালতে উঠবে মামলাটি তখন সবাই সব জানতে পারবেন। তবে এটা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। এই ঘটনায় জেএমবির বিভিন্ন জনের নাম আছে। যারা এই কাজে জড়িত তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না।
তিনি বলেন, এ মামলা তদন্তকালে বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতা, টেকনোলজি, বিশেষজ্ঞের মতামত, আলামত সংগ্রহ, স্বাক্ষ্য গ্রহণ করে অপরাধীদের চিহ্নিত করা একটি জটিল প্রক্রিয়া ছিল। আমাদের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অভিজ্ঞ অফিসারগণ তদন্তকালে এই ঘটনার পরিকল্পনাকারীদের কার কি কি পার্ট ছিল যেমন- বাস্তবায়নের জন্য অস্ত্র সংগ্রহের জন্য যারা জড়িত, অস্ত্রের উৎস, অর্থের যোগানদাতা, আশ্রয়দাতা, কোর্ডিনেটরদের সকলকে শনাক্তসহ অপরাধীদের সাজা নিশ্চিত করার জন্য ঘটনা সংশ্লিষ্ট আলামত সংগ্রহ করেছে। নিরীহ লোক যাতে হয়রানি না হয় সেদিকে লক্ষ রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ জুলাই দেশ কাঁপানো এই হামলায় ১৭ বিদেশি, দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ হত্যা করা হয় ২২ জনকে। পরে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে জীবিত উদ্ধার করা হয় ১৩ জনকে, হত্যা করা হয় পাঁচ হামলাকারী।
তারা সবাই জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ।