টপ পোষ্ট

আন্দোলন ছাড়া অন্য কোন চিন্তা নেই: মির্জা ফখরুল

0

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাগারে থাকা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে আন্দোলন ছাড়া এখন অন্য কিছু চিন্তা করছে না বিএনপি।’

শনিবার বিকেলে এক আলোচনা সভায় দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘এই দেশে গণতন্ত্রের যতটুকু অর্জন হয়েছিল, যিনি স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম করেছিলেন, তাদের বিদায় করেছিলেন, যে গৃহবধূ থেকে দেশের পথে-প্রান্তরে গণতন্ত্রের গান গেয়ে বেড়িয়েছেন, আজকে সেই গণতন্ত্রের মা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার অন্যায়ভাবে বন্দি করে রেখেছে।’

‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, কোনো বিকল্প নেই, কোনো বিকল্প নেই আন্দোলন, আন্দোলন, আন্দোলন। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা দেশনেত্রীকে কারামুক্ত করব। তার আগে অন্য কোনো কিছু আমরা চিন্তা করছি না, করব না।’

সরকার হটাতে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির জন্য সব গণতান্ত্রিক দল ও সংগঠনকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি জায়গায়, প্রতিটি মানুষ এখন শুধু অপেক্ষা করে আছে কখন একটা সুযোগ পাবে, সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে এই সরকারকে একেবারে চিরতরে উৎখাত করে দেবে।

‘আমরা এখন একেবারেই শান্তিপূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করছি। এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই আমরা সরকারের পতন ঘটাব। বাধ্য করব দেশনেত্রীসহ আমাদের সকল রাজবন্দিদের মুক্ত করবার জন্য।’

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আজিজুল বারী হেলাল, শফিউল বারী বাবু, ইয়াসিন আলী, রাজিব আহসান, আকরামুল হাসান, কাজী আবুল বাশারসহ নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিও জানান ফখরুল।

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘একাদশ নির্বাচন নিয়ে সরকার ষড়যন্ত্র করছে। দেশনেত্রীকে নির্বাচন থেকে বাইরে রেখে, বিএনপিকে নির্বাচন থেকে বাইরে রেখে আবার ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো প্রহসনের ভোট ছাড়া নির্বাচন করতে চায়। আমরা বলতে চাই, ২০১৪ সালের মতো নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি দেশে হবে না, হতে দেওয়া হবে না। দেশনেত্রীকে ছাড়া এদেশে নির্বাচন হতে দেবে না জনগণ।’

স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, ‘দেশনেত্রীকে মুক্তি করতে আইনি লড়াই যথেষ্ট নয়। জনমত সৃষ্টি করতে হবে, বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন করতে হবে।’

নির্বাচনের প্রস্তুতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আমরা একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। বিএনপি গণতান্ত্রিক দল, গণতান্ত্রিক পন্থায় আমরা দেশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই। সেটা করতে গেলে আমাদেরকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে এবং প্রত্যেকটি জায়গায় আপনাদেরকে নিয়োজিত করতে হবে।’

আওয়ামী লীগ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। বসে থাকলে চলবে না। এদিকে আমাদের পিছিয়ে থাকলে চলবে না। আমাদেরকে সব সময়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। রাজনীতির ব্যাপার.. যেকোনো সময় নির্বাচন হতে পারে।’

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দেশে একদলীয় বাকশালের শাসন চলছে, কোনো স্বাধীনতা নাই, কথা বলতে পারবেন না, মুখও খুলতে পারবেন না। বেশি কথা বলবেন সব জেলে ঢুকাইয়া দিব, আপনাদের নেত্রীকে জেলে ঢুকাইয়া দিছে। এই অবস্থা চলতে দেওয়া যাবে না।’

মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির পরিচালনায় আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, ফজলুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

আলোচনা সভায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ আজম খান, এজেডেএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী, সিরাজউদ্দিন আহমেদসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুণ

আপনার মন্তব্য দিন