টপ পোষ্ট

দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী

0

 প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুইজারল্যান্ডে পাঁচ দিনের সফর শেষে দেশে ফিরেছেন। প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারি এমিরেটস এয়ারলাইন্সের বিমানটি গতকাল শনিবার সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরে এ সময় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিসভার সদস্যসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান প্রফেসর ক্লাউস সোয়াবের আমন্ত্রণে সংস্থার ৪৭তম বার্ষিক সভায় যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী সুইজারল্যান্ডের দাভোসের উদ্দেশে ১৫ জানুয়ারি ঢাকা ত্যাগ করেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী এবং আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। শেখ হাসিনাই প্রথম বাংলাদেশি কোন নির্বাচিত নেতা যিনি এই বার্ষিক সভায় অংশগ্রহণ করেন। যেখানে রাষ্ট্রনায়ক, শীর্ষ ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, যোগাযোগবিদ, চিন্তাবিদ এবং প্রযুক্তিবিদগণ নানা গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক সমসা নিয়ে পর্যালোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী এই বার্ষিক সভায় অংশগ্রহণ ছাড়াও ডব্লিউইএফের নির্বাহী চেয়ারম্যান প্রফেসর ক্লাউস সোয়াবের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন এবং রাষ্ট্রনায়ক ও সরকার প্রধানসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হন। এদিকে, ডাভোসে ধনী ও ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের সংগঠন হিসেবে পরিচিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে বাংলাদেশের কোনো নির্বাচিত সরকার প্রধানের অংশগ্রহণ ছিল এটাই প্রথম। সম্মেলনে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী পানি ব্যবস্থাপনা, আঞ্চলিক সহযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা, কর্মসংস্থানসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন এবং প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন। একটি সেশনে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুেকন্দ্র প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়। পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ডাভোসে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটা ভিন্ন পর্যায়ে চলে গেল। ডাভোসে প্রধানমন্ত্রী আসার সঙ্গে সঙ্গে গ্লোবাল ইনভেস্টমেন্টের ফোকাস এসে গেল। এখন বাংলাদেশকে গ্লোবাল ইনভেস্টমেন্ট রাডারের মধ্যে রেখে বড় বড় কোম্পানি, বড় বড় দেশ চিন্তা করবে- বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য খুব ভালো জায়গা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে যোগদান করে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সমস্যাগুলো যেমন তুলে ধরেছেন, তেমনি বিশ্বনেতাদের কাতারে দাঁড়িয়ে সারা পৃথিবীকে মানুষের বাসযোগ্য করার জন্য কী করা উচিত্- সেই মতামতগুলো প্রকাশ করেছেন।
ইউনূস গংদের টাকায় ডব্লিউইএফের সভায় রামপালের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে : এদিকে গতকাল বিকেলে সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা দেখা করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইউনূস গংদের টাকায় ডব্লিউইএফের সভায় রামপালের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে। সুন্দরবনের অদূরে রামপাল বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণ নিয়ে সুইজারল্যান্ডে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডউিইএফ) সম্মেলনে বিশ্ব পরিবেশবাদীদের প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এই বিষয়টিকে পরিকল্পিত বলে মনে করছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, এই সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের দিয়ে রামপাল নিয়ে বলা হয়েছে। নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস গংরাই পরিকল্পিতভাবে সেখানে এই ইস্যুটি তুলেছেন। এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইউনূস সাহেবদের অনেক টাকা। তারা টাকা খরচ করিয়ে সেখানে এ ইস্যুটি উত্থাপন করিয়েছে এবং বিশ্ব নেতাদের দিয়ে রামপালের বিরুদ্ধে বলিয়েছে। ডব্লিউইএফের সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পরিবেশবাদী আল গোর রামপাল প্রসঙ্গ তুলে আনেন। অনুষ্ঠানে আল গোর বলেন, গত বছর পর্যন্ত বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত সৌরশক্তির প্যানেল স্থাপনকারী দেশ ছিল। কিন্তু এখন সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল সুন্দরবনে পরিবেশ দূষণকারী একটি নতুন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। হাজার হাজার মানুষ এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে। যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল রামপাল নিয়ে আল গোরের বক্তব্যের প্রসঙ্গ তোলেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমিও বিশ্ব নেতাদের, পরিবেশবাদীদের চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলে এসেছি আপনারা পরিবেশবাদীরা বাংলাদেশে আসেন। আমরা ঘুরে ঘুরে সব দেখাব। পৃথিবীর যে কোনো পরিবেশবাদী রামপাল প্রকল্প দেখতে আসতে পারেন। গণভবনে সাক্ষাত্ করতে যাওয়া একাধিক কেন্দ ীয় নেতা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, প্রধানমন্ত্রী প্রায় ১০ মিনিট সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।  এ সময় গণভবনে সাক্ষাত্ করতে যাওয়া কেন্দ্রীয় নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার সুইজারল্যান্ডে বরফ খেলায় অংশ নেয়া ও ছবি তোলার বিষয়টি নিয়ে প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বরফের দেশে গেলাম তাই ছবি তুললাম। অনেক ঠাণ্ডা। মাইনাস থেকে প্লাসে আসলাম। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আগে তো এসব সম্মেলনে বাংলাদেশ দাওয়াত পেত না। এখন বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন দেখে বিদেশিরা অভিভূত। তাই বাংলাদেশের ব্যাপারেও তারা আগের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করেছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে আগামী ২৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আমন্ত্রণপত্র গ্রহণ করে শেখ হাসিনা বলেন, অনুষ্ঠানে সবাইকে একটু একটু বক্তব্য রাখতে দিও, আর অনুষ্ঠানের খরচ সাবেক ছাত্র নেতাদের কাছ থেকে নিও। –

সুত্রঃ বর্তমান

শেয়ার করুণ

আপনার মন্তব্য দিন